বাড়ি ইতিহাস খোঁজ পাওয়া গেলো তুতানখামুনের হারানো নগরের

খোঁজ পাওয়া গেলো তুতানখামুনের হারানো নগরের

76
0

হারানো দুনিয়ার ওবিস্মরণীয় ধ্বংসাবশেষ

২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রত্নবিদরা মিশরের লুক্সর শহরের পশিম প্রান্তে একটা শবাধার মন্দিরের খোজ করছিলেন। তবে আশার চেয়েও বেশী কিছ তারা পেয়ে গেলেন। ২০২১ সালের এপ্রিলে, প্রত্নতত্ব দলের নেতা ডঃ জাহী হাওয়াস ঘোষণা করেন তারা ৩০০০ হাজার বছর বছরের পূরনো মিশরের হারানো স্বর্ন শহর আটেনের খোঁজ পেয়েছেন। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ আবিস্কার যার তুলনা করা হচ্ছে ১০০ বছর আগে খোদ তুতানখামুনের কবর খুঁজে পাওয়ার সাথে।

অবাক করা ভিত্তি

আটেন মিশরে পাওয়া পূরনো শহরগুলোর মধ্য সবচেয়ে বড়। এটি আমেন হোটেপের সময়কালের। খ্রীস্টপূর্ব ১৩৯১ থেকে ১৩৫৩ পর্যন্ত তিনি মিশর শাসন করেছিলেন। এটি ফেরাউনের জন্য নির্মিত একটি বিশাল প্রাসাদীয় কমপ্লেক্সের অংশ ছিল।

আশ্চর্যজনকভাবে সুসংরক্ষিত

এই আবিস্কারের সবচেয়ে অবাক করা দিক হলো, শহরটি খুবই চমৎকারভাবে সংরক্ষিত ছিলো। শহরের আবাসিক এলাকায় ১০ ফুট উচু দেয়ালের কাদা মাটির ইট দিয়ে তৈরী বাড়ীগুলো স্পস্ট দেখা যাচ্ছিল। দেয়ালে আমেনহোটেপের সিলমোহর থেকেই এর বয়স নির্ধারণ করা সম্ভব হয়েছে।

এক সমৃদ্ধ কাল

আমেনহোটেপের রাজত্বমিশরীয় সাম্রাজ্যের উচ্চতা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এই সময় বহুসংখ্যক মন্দির ও বিলাসবহল সরকারী ভবন নির্মাণ করা হয়। আটেনের আবিস্কারের ফলে এই সমৃদ্ধ সময়ে মিশরের জীবন কেমন ছিল তার একটা ধারণা পাওয়া যাবে।

অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শহর

আটেন কোন সাধারণ শহর ছিলনা। প্রত্নবিদদের মতে, এটি একটি বিশাল শিল্প এবং প্রশাসনিক কেন্দ্র ছিলো। সম্ভবত এটি সে সময় মিশরের রাজধানী ছিলো।

একটি আকর্ষণীয় শিলালিপি

প্রত্নতাত্ত্বিকরা শিলালিপি সম্বলিত একটি মৃৎপাত্র আবিষ্কার করেছেন যা খ্রীস্টপূর্ব ১৩৩৭ সালের বলে তার সিদ্ধান্তে পৌছেছেন। ধারণা করা হয় পাত্রটি তৈরির এক বছর পর শহরটি পরিত্যক্ত হয়। দেশের উত্তরে আমরনায় নতুন রাজধানী স্থাপিত হয়।

ভিন্ন পাড়া

বেশ কয়েকটি ভিন্ন পাড়া চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে আছে একটি বেকারি, একটি প্রশাসনিক কোয়ার্টার এবং হাউজিং এলাকা। তদুপোরি প্রত্নতাত্ত্বিকরা আজ পর্যন্ত তিনটি প্রাসাদ খুঁজে পেয়েছেন।

শিল্পের লক্ষণ

বেকারিতে, সাইটের শ্রমিকরা রান্না এবং খাবার প্রস্তুতির জন্য ভালভাবে সংরক্ষিত এলাকা, উনুন, সরঞ্জাম এবং পাত্র খুঁজে পান। এলাকা এবং প্রত্নবস্তুর আকার থেকে বোঝা যায় যে বেকারিটি বিপুল সংখ্যক লোকের খাবার সরবরাহের জন্য ব্যবহার করা হতো।

অযাচিত আবিস্কার

একজন প্রত্নদবিদ হওয়া খুব চটকদার কোন ব্যাপার নয়। যেসব জিনিষ পাওয়া গেছে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে অস্বস্তিকর আবিস্কার হলো ৩৪০০ বছরের পুরণো এক কন্টেইনার ভর্তি সিদ্ধ কিংবা শুকানো মাংস। এই সাইটে সোনায় মোড়ানো মাছও পাওয়া গেছে।

ভীতিকর কঙ্কাল

এই ধরনের স্থানে মানুষের দেহাবশেষ খুঁজে পাওয়া অস্বাভাবিক নয়, তবে বিশেষ করে একটি আবিষ্কার প্রত্নতাত্ত্বিকদের বিভ্রান্ত করেছে। তার বাহু প্রসারিত এবং হাঁটুর চারপাশে একটি দড়ি বাঁধা অবস্থায় আবিষ্কৃত কঙ্কাল্টির স্থান এবং অবস্থান খুবই খাপছাড়া। এ নিয়ে আরো গবেষণা হওয়ার দরকার বলে তারা মনে করেন।

গণ কবরস্থান

এই বিশেষ কঙ্কালের পাশাপাশি শ্রমিকরা একটি বড় কবরস্থান এবং সমাধি খুঁজে পেয়েছে যা রাজাদের উপত্যকায় পাওয়ার অনুরূপ। এগুলি এখনও পুরোপুরি অন্বেষণ করা হয়নি, তাদের তাৎপর্য বোঝার জন্য আরও খননের প্রয়োজন।

কৌতূহলজনক শিল্পকর্ম

সাইটটি বস্তু এবং শিল্পকর্মে এত পরিপূর্ণ যে মএন হয় এটিকে কেবল গতকালই পরিত্যক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে গহনা, মৃৎশিল্প, মূর্তি, এবং মদের পাত্র থেকে মাটির টুপি এবং সেইসাথে বয়ন তাঁত এবং কাচ তৈরির জন্য সরঞ্জামগুলির একটি বহর।

পরবর্তীতে ব্যবহার

প্রাথমিকভাবে পরিত্যাগের পর, শহরটি পরে তুতানখামুন পূণরায় ব্যবহার করেছিলেন বলে মনে করা হয়। শহরটিতে পরে তুতানখামুনের বিধবাকে বিয়ে করার পর সিংহাসন আরোহণকারী রাজা আই বাস করেছিলেন। এটা বিশ্বাস করা হয় যে শহরটি ৭ম শতাব্দী পর্যন্ত ব্যবহার করা হয়েছিল এর পর এটি চিরতরের জন্য পরিত্যক্ত হয়েছিল।

-ইউরোবাংলা ডেস্ক।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে