ইউরোবাংলা ডেস্কঃ ২০১৭ সালে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন লিভারপুলের বোমা হামলাকারী আল সোয়ালমিন।

লিভারপুলের এই গাড়ীবোমা হামলাকারী গত এপ্রিল থেকেই এরজন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কাউন্টার-টেরর পুলিশের বরাত দিয়ে একথা জানা গেছে।  ইমাদ আল সোয়ালমিন লিভারপুল মহিলা হাসপাতালের বাইরে রবিবার  প্রথম ও দ্বীতীয় বিশ্বযুদ্ধে নিহতদের স্মরণদিবসে সকাল ১১টার কিছু আগে একটি ট্যাক্সিতে মৃত্যবরণ করেন।  কাউন্টার টেররিজম পুলিশের নর্থ ওয়েস্ট অঞ্চলের প্রধান সহকারী চিফ কনস্টেবল রুস জ্যাকসন বলেছেন, “ডিভাইসের  বিভিন্ন উপাদান ক্রয়ের উপর একটি জটিল  চিত্র”  ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছে।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা জানি যে আল সোয়ালমিন এই বছরের এপ্রিল থেকে বাড়ীটি ভাড়া নিয়েছিল এবং আমরা বিশ্বাস করি যে অন্তত সেই সময় থেকে প্রাসঙ্গিক কেনাকাটা করা হয়েছিল।”

“আমরা  আল সোয়ালমিনের একজন নিকটাত্মীয় খুঁজে বের করেছি যিনি আমাদের জানিয়েছেন যে তিনি ইরাকে জন্মগ্রহণ করেছেন।

“আমাদের অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে আল সোয়ালমিন মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল, এটি আমাদের তদন্তের অংশ হবে এবং বিষয়টি পুরোপুরি বুঝতে কিছুটা সময় লাগবে।”

মিঃ জ্যাকসন বলেন,  ময়না-তদন্তে মৃত্যুর কারণ হিসেবে “আগুন এবং বিস্ফোরণ” নিশ্চিত  করা করেছে।

তিনি আল সোয়ালমিনকে চেনেন এমন লোকদের এগিয়ে আসার জন্যও আবেদন করেন, কিন্তু তিনি বলেন যে পুলিশ ” বর্তমানে এই ঘটনার সাথে  মার্সিসাইড এলাকা থেকে  জড়িত অন্য আর কাউকে খুজছে না।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী প্রীতি প্যাটেলের   হামলাকারী ব্রিটেনের “অকার্যকর” আশ্রয় ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে দেশে থাকতে সক্ষম হয়েছে এই মন্তব্যের পর এই কথা উঠে আসে।

প্রীতি প্যাটেল বলেন, পূরো বিষয়টি , একটা চড়কির মতো যেখানে পূরো ইন্ডাস্ট্রিই  ব্রিটিশ জনগনকে ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে পণ করা ব্যক্তিদের অধিকার রক্ষায় নিবেদিত।

৩২ বছর বয়সী আল সোয়ালমিন ২০১৪ সালে মধ্যপ্রাচ্য থেকে যুক্তরাজ্যে এসেছেন বলে মনে করা হচ্ছে এবং পরের বছর তার আশ্রয়ের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়, কিন্তু  তারপরও তিনি  এদেশে রয়ে যান।

মিস প্যাটেল সাংবাদিকদের বলেন: “এই লোকেরা আমাদের দেশে এসেছে এবং ব্রিটিশ মূল্যবোধের অপব্যবহার করেছে, আমাদের দেশ এবং আমাদের সমাজ কাঠামোর মূল্যবোধের অপব্যবহার করেছে।

“এবং এর ফলে, একটি পুরো শিল্প আছে যারা মনে করে যে এই ব্যক্তিদের রক্ষা করা সঠিক, যারা ব্রিটিশ নাগরিকদের বিরুদ্ধে সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধ ঘটায়, তাদের জীবনকে ধ্বংস করে, সম্প্রদায়গুলিকে ক্ষতিগ্রস্থ করে – এবং এটি সম্পূর্ণ ভূল।”

২০১৭ সালে লিভারপুলের অ্যাংলিকান ক্যাথিড্রালে আল সোয়ালমিন ইসলাম থেকে খ্রীষ্টধর্ম গ্রহণ করে ছিলেন।

আশ্রয় প্রার্থীদের খ্রীস্ট ধর্মে দীক্ষিত করার  চার্চ অফ ইংল্যান্ডের ভূমিকায় হোম অফিসের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে ।

ম্যালকম হিচকট বলেন ২০১৭ সালে  আল সোয়ালমিন যখন  মরিয়া হয়ে থাকার জন্য একটা জায়গা খুঁজছিলেন, তখন তিনি এবং তার স্ত্রী তাকে নিজেদের বাড়ীতে নিয়ে যান।

মিঃ হিচকট  ডেইলি টেলিগ্রাফকে জানান: “তিনি খুব শান্ত প্রকৃতির ছিলেন।  কিন্তু যীশুর ওপর বিশ্বাসের কারণে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। আমি প্রতিদিন তার সাথে ডাইনিং রুমে আধ ঘন্টা প্রার্থনা করতাম। আমি মনে করি না যে তার বিশ্বাস কোন ভান ছিল।”

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে