ইউরোবাংলা ডেস্কঃ বিজ্ঞানীরা একটি নতুন ধরনের রোবট আবিষ্কারের পর  বড় ধরনের সাফল্য দাবি করেছেন। তারা দাবি করেন স্বাস্থ্যসেবা পরিবেশ এবং প্রযুক্তির জন্য এটি একটি বড় অগ্রগতি। উল্লেখযোগ্য দিক হলো এটি নিজে নিজে পুনরুৎপাদন করতে সক্ষম।

জেনোবট নামে পরিচিত রোবটি ১ মিলিমিটার এর চেয়েও কম লম্বা। এটি নিজেকে নিরাময় করতে পারে এবং শক্তি যোগাতে পারে। রোবটটি তৈরি করা হয়েছে ব্যাঙের চামড়া এবং হৃদপিন্ডের কোষ থেকে।

২০২০ সালে তৈরি করা এই জেনোবটগুলি বিশ্বের প্রথম জীবন্ত রোবট। যদিও এটি একটি রোবট তবে তা মেশিন এবং প্রাণীর একটি হাইব্রিড শংকর। বিজ্ঞানীরা বলছেন এটি একটি সম্পূর্ণ নতুন ধরনের জীবন।

এখন বিজ্ঞানীরা রোবটকে নিজে নিজে প্রতিলিপি করার ক্ষমতা দিয়ে আরো এক ধাপ অগ্রসর হয়েছেন পৃথিবীর প্রথম স্ব-প্রতিলিপি’র মেশিন তৈরিতে।

“আমরা জেনোবট তৈরি করেছি যা হাঁটাচলা করে, আমরা জেনোবট তৈরি করেছি যেটা সাঁতার কাটে এবং এখন আমরা এমন জেনোবট  তৈরি করেছি যেটি নিজেকে প্রতিলিপি করতে সক্ষম। আমরা মনে করি এটি একটি গভীর অভিজ্ঞতা”, বলেন ভারমন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জশ বনগারড।

তিনি আরো বলেন, “বিজ্ঞানীরা ১৯৪০ সাল থেকে স্ব- প্রতিলিপি মেশিন তৈরির চেষ্টা করছেন। কিন্তু এটি তুলনামূলকভাবে কঠিন বলে প্রমাণিত হয়েছে। আমরা মাত্র দুই বছর ধরে জেনোবট নিয়ে কাজ করছি এবং এখন তারা স্ব- প্রতিলিপি তৈরি করতে পারে।”

গবেষকরা বলেন, জৈবিক প্রযোজনের এই নতুন ফর্মে জেনোবটগুলি তাদের pac-man আকৃতির মুখের ভিতর চারপাশ থেকে একক ব্যাঙের ত্বক কোষ সংগ্রহ করে। এরপর তারা কোষগুলোকে সংকুচিত করে এবং শিশু হিসেবে একত্রিত করে তারপর নতুন শিশুকে তাদের মুখ দিয়ে সন্তানের মতোই জন্ম দেয়। নতুন এই শিশুবটগুলো তাদের মতোই হাঁটাচলা করতে পারে। তাদের সন্তানেরা তখন একই কাজ করে এবং প্রক্রিয়াটি ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে।

গবেষকরা বলেন, তাদের আবিষ্কারের ব্যবহার কি রকম হবে সে সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা এখনই সম্ভব নয়।  ‘নতুন এই প্রযুক্তির কার্যকর ব্যবহারের জন্য আমরা অনেক বছর দূরে আছি।’

তাদের প্রজনন করার ক্ষমতা ক্ষুদ্র জেনোবটগুলির জীবনকালকে  ব্যাপকভাবে প্রসারিত করবে যা সাধারণত প্রায় এক সপ্তাহ বেঁচে থাকে। এগুলো মানব দেহের ভিতরে এবং বাহিরে দরকারি ক্রিয়া-কলাপ গুলো সম্পন্ন করতে পারবে।

এগুলো শরীরে আর্থাইটিস জয়েন্টগুলো পরিষ্কার করা, পুনরুৎপাদন সক্ষম যৌগ সরবরাহ করা, পাকস্থলী এবং অন্ত্রের সমস্যা চিহ্নিত করা, ক্ষত নিরাময় করা, ক্যান্সার কোষ গুলোকে টার্গেট করা এবং অঙ্গ প্রতিস্থাপনের জন্য টিস্যু তৈরি করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।

রোবটগুলিকে ‘জেনোবট’ বলা হয় কারণ তারা জেনোপাস লায়েভিস ব্যাঙ থেকে নেওয়া জৈবিক উপাদান দিয়ে তৈরি।

প্রফেসর বনগারডের মতে, এগুলো দেখতে ভাজা পপকর্নের মত।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে