বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের লড়াকু ব্যক্তিত্ব এ কে আজাদ কনর এর প্রতি সমবেদনা জানাতে এবং সমাজকে কলুষিত করার প্রবণতা রুখতে কমিউনিটির পক্ষ থেকে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা- সংঘবদ্ধ হামলাকারীদের কমিউনিটির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে এই ঘটনার জন্য তীব্র নিন্দা জানান।
উল্লেখ্য আশির দশকের বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের লড়াকু ব্যক্তিত্ব এ কে আজাদ কনর লাঞ্চিত এবং শারিরীকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন গত ২৩ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার। ঐদিন দুপুরে একে আজাদ কনরকে হামলাকারীদের একজন ফোন করে ভিউ ভিলা ব্যংকুইটিং হলে আসার জন্য আহ্বান জানায়। ঐ হামলাকারীর সাথে ব্যবসায়িক সম্পর্ক থাকলেও ঐসময় কোন জরুরী কাজ না থাকায় একে আজাদ কনর আসতে অনীহা প্রকাশ করেন। ঐ লোক বারবার চাপ দিলে কিছুক্ষণের মধ্যেই পার্টনারসহ তিনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আসেন।
গত ৩০ ডিসেম্বর ২০২১, বৃহস্পতিবার, দুপুরে স্থানীয় এক রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত এ প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন- বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব গাবরু মিয়া। সভা পরিচালনা করেন- কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব কমরেড মসুদ আহমদ। আয়োজকদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- প্রবীণ রাজনীতিবিদ বশির মিয়া কাদির, রানা মিয়া চৌধুরী, সয়ফুল আলম, এনামুল হক খান নেপা ও জুনেদুর রহমান জুনেদ।
একজন অসুস্থ-বয়স্ক এবং নিবেদিতপ্রাণ কমিউনিটি ব্যক্তিত্বের উপর শারিরীকভাবে আঘাত করেছে সংবাদপেশার সাথে জড়িত ক‘জন উল্লেখ করে সভায় বক্তারা- সমাজকে কলুষিত করার মত এ ধরণের প্রবণতাকে কোনভাবেই প্রশ্রয় দেয়া সমীচিন নয় উল্লেখ করে ভবিষ্যতে যাতে এর পুনরাবৃত্তি না ঘটে এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক করা হয়। এছাড়াও বক্তারা মূল বিষয়কে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করারর জন্য এলাকাভিত্তিক এবং গোষ্ঠিবদ্ধ দ্বন্ধ তৈরির প্রচেষ্টায় লিপ্তদেরও সমাজ ও কমিউনিটির স্বার্থে তা থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানান। তারা বলেন- কমিউনিটি সচেতন রয়েছে বলেই স্বতঃস্ফুর্ত প্রতিবাদ সভায় সর্বস্তরের কমিউনিটির মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়।

তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর সিদ্ধান্ত এবং আজাদ কনর এর প্রতি সমবেদনা জানানোর জন্য বক্তারা চ্যানেল এস এর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতিও বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং এই হামলার সাথে অন্যান্য টিভি চ্যানেল এর জড়িতদের ব্যাপারেও সংশ্লিষ্ট চ্যানেলসমূহে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দ্রুত উদ্যোগ প্রত্যাশা করেন।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ, কাউন্সিলর আব্দুল কাদির জিলানী, শাহ আবিদ আলী, শাহ রোকন আহমদ, আব্দুল মালিক ছানু মিয়া, মোহাম্মদ মারুফ, আব্দুল কুদ্দুস রাজু, সোহেল আহমদ চৌধুরী, মুস্তাফিজুর রহমান দীপু, এম হাসান খোকন, হোসাইন আহমদ, রহমত আলী প্রমুখ।

চ্যানেল-এস থেকে নিয়োগ বাতিল:
স্থানীয় একজন সাংবাদিক প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্বৃতি দিয়ে সুরমাকে জানান, ওই হামলার ঘটনায় চারজন সাংবাদিকের উপস্থিত ছিলেন। সিসিটিভি ফুটেজেও তা দেখা গেছে। এই সংঘবদ্ধ হামলার জন্য কে কতটুকু দায়ী, তা পুলিশী মামলার তদন্তে মামলায় উঠে আসবে এবং প্রকৃত অপরাধীরা শাস্তি পাবে বলে কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ আশা প্রকাশ করেছেন। সূত্র আরও জানায়,  এই ঘটনায় জড়িত যে চারজনের নাম কমুনিটিতে ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে, তারা হলেন, রিয়াদ আহাদ ও আহমদ সেলিম (চ্যানেল এস)।, আমিরুল ইসলাম বেলাল (টিভি ওয়ান), কাজী লোকমান হোসেন ও (আই অন টিভি)। এরমধ্যে  কমুনিটির দাবীর প্রতি সন্মান দেখিয়ে চ্যানেল এস তাদের প্রতিনিধি ও ক্যামেরাম্যানকে অব্যাহতি দিয়েছে। অন্য দুই টিভি কতৃপক্ষও বিষয়টি বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে।

লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব প্রসঙ্গ:
এদিকে বার্মিংহাম কমিউনিটিতে আজাদ কনরের উপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে ক‌মিউ‌নি‌টি নেতা কমরেড মাসুদ আহমদ বলেন, আজাদ কনরের উপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত সকলেই লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের মেম্বার। লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব এক‌টি সম্মানজনক প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠা‌নে কিভা‌বে সন্ত্রাসী মনোভাবের লোকজন মেম্বার হয়। প্রেসক্লা‌বের ভাবমূ‌র্তির জন‌্য আমরা আশা কর‌বো ক্লাবকর্তৃপক্ষ বিষয়‌টি‌কে বি‌বেচনা ক‌রে দেখ‌বেন।

সূত্রঃ সাপ্তাহিক সুরমা

বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের লড়াকু ব্যক্তিত্ব একে আজাদ কনর লাঞ্চিত: সংঘবদ্ধ হামলাকারীদের বিচারের দাবী – Surma News Group

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে