ইউরোবাংলা রিপোর্টঃ ভারতীয় পুলিশ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে যে তারা ২০ বছর বয়সী এক পুরুষ্কে গ্রেফতার করেছ। ঐ ব্যাক্তি অনলাইন মুসলিম নারীদের ছবি ব্যবহার করে নিলাম করার জন্য একটি অ্যাপ তৈরী করেছিলো। সাম্প্রদায়িক নিপীড়নের মামলার তদন্ত আরও বিস্তৃত করনের অংশ হিসেবে তারা এই অভিজান চালায়।

নয়াদিল্লিতে ২০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে প্রহরা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে

গিটহাব প্ল্যাটফর্মের একটি ওপেন সোর্স অ্যাপ যার নাম ‘বুলি বাই’। মুসলিম নারীদের বর্ণনা করার জন্য এটি একটি অবমাননাকর শব্দ । অ্যাপটি সরিয়ে ফেলার আগে কোন সম্মতি ছাড়াই ডজন খানেক মহিলার ছবি শেয়ার করেছিল ঐ ব্যাক্তি।

রাজধানী নয়াদিল্লির একজন পুলিশ কর্মকর্তা কে পি এস মালহোত্রা জানিয়েছেন, রাষ্ট্রায়ত্ত কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স টিমের সাথে জড়িত তদন্তের পর তার দল আসামের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের যোরহাট থেকে ২০ বছর বয়সী এক ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রকে গ্রেপ্তার করেছে।

মালহোত্রা বলেন, “তিনি সেই ব্যক্তি যিনি গিটহাব – এ বুলিবাই অ্যাপ তৈরি করেছিলেন। তিনি টুইটার হ্যান্ডেল @bullibai_ এবং অন্যান্য হ্যান্ডেলগুলিও তৈরি করেছিলেন,” ।

পশ্চিমাঞ্চলীয় মুম্বাই শহরের পুলিশ, যারা এই অ্যাপের তদন্ত করছে, তারা এই সপ্তাহে পৃথকভাবে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে, যার মধ্যে ২১ বছর বয়সী দুই ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র এবং একজন ১৮ বছর বয়সী মহিলা রয়েছে। মুম্বাই পুলিশ বলেছে যে, তারা তদন্ত করছে যে অ্যাপটি -যা মানুষের প্রকৃত নিলামে জড়িত নয়-, একটি “বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের” অংশ ছিল কিনা।

অ্যাপটি বেশ কয়েকজন ভারতীয় মুসলিম সাংবাদিককে লক্ষ্যবস্তু করেছিলো, যার মধ্যে রয়েছে ইসমত আরা যিনি রবিবার একটি পুলিশ অভিযোগ দায়ের করেন এবং তারপরে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন যে, অ্যাপটি “মুসলিম মহিলাদের অপমান করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে” ।

বৃহস্পতিবার এক টুইটবার্তায় আরা বলেন, “@DelhiPolice আজকের গ্রেপ্তারের পর আমি আশা করি আমার মতো সাংবাদিকসহ মুসলিম নারীদের এই ব্যাপক হয়রানির পেছনে অপরাধীরা শেষ পর্যন্ত ধরা পড়বে এবং শাস্তি পাবে।”

ভারতের ১.৩ বিলিয়ন জনসংখ্যার প্রায় ১৪% মুসলমান। সম্প্রদায়ের কিছু অংশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশাসন এবং হিন্দু ডানপন্থী সমর্থকদের সাথে মতবিরোধে রয়েছে, যার মধ্যে আছে একটি বিতর্কিত ২০১৯ নাগরিকত্ব আইন যা বড় আকারের বিক্ষোভের সূত্রপাত করেছিল।

এখনও পর্যন্ত গ্রেপ্তারহওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ উত্তর ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের বাসিন্দা। এই সপ্তাহের শুরুতে তার সাথে কথা বলা একজন স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, ১৮ বছর বয়সী এই কিশোরী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সময় কাটাতে শুরু করে এবং গত বছর স্কুল ছাড়ার পরীক্ষা শেষ করার পর অন্যান্য হিন্দু দক্ষিণপন্থী ব্যবহারকারীদের সাথে যোগাযোগ করে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা বলেন, তিনি তাকে বলেছেন যে, তার কর্মকাণ্ড হিন্দু দক্ষিণপন্থী মতাদর্শের উপর ভিত্তি করে প্রভাবিত, যা তিনি ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ এবং টুইটার সহ সামাজিক মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করছিলেন।

নিজের মনোযোগকে সরিয়ে নিতে তিনি সামাজিক মাধ্যমের শরনাপন্ন হন কিন্তু ক্রমশ তিনি এর পাকে জড়িয়ে পড়তে থাকেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে