বাড়ি বিশ্ব পশ্চিমের সঙ্গে অসলো আলোচনা ‘যুদ্ধের পরিবেশ পরিবর্তন করবে’ -তালেবান

পশ্চিমের সঙ্গে অসলো আলোচনা ‘যুদ্ধের পরিবেশ পরিবর্তন করবে’ -তালেবান

77
0
তালেবান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ ২০২১ সালের ৬ ই সেপ্টেম্বর কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন। – ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১ তারিখে তালেবানরা বলেছে যে তাদের শাসনের বিরুদ্ধে যে কোন বিদ্রোহ “কঠোরভাবে আঘাত” করা হবে, এর আগে তারা পাঞ্জশির উপত্যকা দখল করেছে – প্রতিরোধের শেষ দূর্গ। (ছবি ওয়াকিল কোহসার/ এএফপি)।

ইউরো বাংলা রিপোর্টঃ শনিবার দলটির শীর্ষ মুখপাত্র এএফপিকে বলেন, আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের পর ইউরোপের মাটিতে পশ্চিমাদের সাথে তালেবানের প্রথম সরকারী আলোচনা উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থার বাহিনীর বিরুদ্ধে দুই দশকের বিদ্রোহের পর “যুদ্ধের পরিবেশ পরিবর্তনে” সহায়তা করবে।

যুদ্ধক্ষেত্রে অচলাবস্থার পরে মার্কিন এবং বিদেশী সৈন্যরা দেশ থেকে চূড়ান্ত প্রত্যাহার শুরু করার সাথে সাথে আগস্টে দলটি আবার ক্ষমতায় ফিরে আসে। কোনো দেশ এখনও তালেবানের সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি । ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের মধ্যে প্রথম ক্ষমতায় থাকার সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য তালেবান সরকার মার্কিন নেতৃত্বাধীন আক্রমণের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিল।

জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ শনিবার এএফপিকে বলেন, “ইসলামিক আমিরাত পশ্চিমা বিশ্বের দাবি পূরণের জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে এবং আমরা আশা করি সাধারণভাবে ইউরোপীয় দেশ ও পশ্চিমাসহ সকল দেশের সাথে কূটনীতির মাধ্যমে আমাদের সম্পর্ক জোরদার হবে।”

তালেবানরা “যুদ্ধের পরিবেশ কে রূপান্তরিত করতে চায়… শান্তিপূর্ণভাবে।”

আফগানিস্তানে দারিদ্র্য সংকট গভীর হওয়ার সাথে সাথে মানবাধিকার এবং মানবিক সহায়তা নিয়ে রবিবার অসলোতে তালেবান ও পশ্চিমা কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনা শুরু হবে। তালেবানদের ক্ষ্মতা দখলের পর থেকে আফগানিস্তানের মানবিক পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি হয়েছে। আন্তর্জাতিক সহায়তা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায় এবং আমেরিকা বিদেশে থাকা আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৯.৫ বিলিয়ন ডলার হিমায়িত করেছে।

জাতিসংঘের মতে, ক্ষুধা এখন ২কোটি ৩০ লক্ষ বা ৫৫ শতাংশ আফগান নাগরিকের জন্য হুমকিরয়ে গেছে। জাতিসংঘ বলছে, দেশটির মানবিক সংকট মোকাবেলায় এ বছর দাতা দেশগুলোর কাছ থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন।

নরওয়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রবিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত এই সফরে তালেবান, নরওয়েকর্তৃপক্ষ এবং ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি মিত্র দেশের কর্মকর্তাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

তালেবান প্রতিনিধিদল নাগরিক সমাজের আফগানদের সাথেও দেখা করবে বলে আশা করা হচ্ছে, যার মধ্যে নারী নেতা ও সাংবাদিকও রয়েছে। এই সাক্ষাৎ এমন এক সময়ে হচ্ছে যখন আফগান নাগরিকদের স্বাধীনতা ক্রমশ খর্ব করা হচ্ছে।

নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যানিকেন হুইটফেল্ড শুক্রবার বলেন, “এই বৈঠকগুলো তালেবানদের বৈধতা বা স্বীকৃতির নিশ্চয়তা দিচ্ছেনা। তবে আমাদের অবশ্যই দেশের প্রকৃত কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলতে হবে। আমরা রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও খারাপ মানবিক বিপর্যয়ের দিকে নিয়ে যেতে দিতে পারি না।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির নেতৃত্বে তালেবান প্রতিনিধিদলের শনিবার অসলো যাওয়ার কথা। তালেবানদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণের বিরুদ্ধে শেষ দুর্গ হিসেবে নিজেকে দাবীকারী বিরোধী দল ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্টের বৈদেশিক সম্পর্ক প্রধান আলী মাইসাম নাজারি এই আলোচনার জন্য নরওয়ের নিন্দা জানিয়েছে।

প্যারিসে অবস্থানরত নাজারি শুক্রবার টুইট করেন, “আমাদের সবাইকে অবশ্যই আমাদের কণ্ঠস্বর তুলে ধরব এবং আফগানিস্তানের প্রতিনিধি হিসেবে কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে স্বাভাবিক করা থেকে বিরত রাখতে হবে।”

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে