গাজায় ইসরায়েলের পরিকল্পিত আগ্রাসনের বিষয়ে স্যার কেইর স্টারমারের অবস্থানের প্রতিবাদে বেশ কয়েকজন লেবার কাউন্সিলর দল ত্যাগ করেছেন – যার মধ্যে ম্যানচেস্টার সিটি কাউন্সিলের প্রথম আরব মুসলিম মহিলাও রয়েছেন।
আমনা আবদুল লতিফ বলেন, লেবার পার্টি থেকে পদত্যাগ করা ছাড়া তার আর কোনো উপায় ছিল না, কারণ তিনি লেবার নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ‘কার্যকরভাবে যুদ্ধাপরাধকে সমর্থন করার’ অভিযোগ করেছেন।
কাউন্সিলর বলেন, গাজায় আটকা পড়া ২২ লাখ ফিলিস্তিনিনাগরিকের জ্বালানি, পানি, খাদ্য ও বিদ্যুৎ আটকে রাখার অধিকার ইসরায়েলের আছে বলে স্যার কেইর এবং সিনিয়র ফ্রন্টবেঞ্চাররা ‘ভয়ঙ্কর’ মন্তব্য করেছেন। এর মাধ্যমে কার্যতঃ তারা ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধকে সমর্থন করেছেন।
স্যার কেইর, যিনি ইসরায়েলের “নিজেকে রক্ষা করার অধিকারের” প্রতি তার দৃঢ় সমর্থন অব্যাহত রেখেছেন এবং বলেছেন যে গাজায় বোমা বর্ষণের জন্য “দায় হামাসের”।
এলবিসিকে দেওয়া এক প্রশ্নের জবাবে লেবার নেতা বলেন, ‘আমি মনে করি, ইসরায়েলের এই অধিকার আছে। পরে তিনি তার বক্তব্য পরিবর্তন করে ব্লেন, অবশ্যই আন্তর্জাতিক আইনের মধ্যে সবকিছু করা উচিত।
আবদুল লতিফ, যিনি এখন স্বতন্ত্র হিসাবে বসবেন, বলেন: “সম্মিলিত শাস্তি আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে অবৈধ। এটা অমানবিক ও অযৌক্তিক’।
তিনি বলেন, ‘আমি বুঝতে পারছি না, আমি যে দলের প্রতিনিধিত্ব করছি, তার নেতৃত্ব কীভাবে সহিংসতা হ্রাস এবং যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায়নি। এটা অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন ও বিপজ্জনক।”
অক্সফোর্ডের দুই লেবার কাউন্সিলর শায়েস্তা আজিজ ও ড. অমর লতিফও গাজা নিয়ে স্যার কেইরের মন্তব্যের পর দল ত্যাগ করেছেন।
আজিজ বলেন, রাজনীতিবিদদের অবশ্যই ‘মানবতা জাগিয়ে তুলতে হবে’ এবং ‘গাজায় সম্মিলিত শাস্তির অবসান ঘটাতে হবে’। লতিফ দাবি করেন, স্টারমার এমন প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন কারণ তিনি ভোট হারানোর ভয় পাচ্ছেন।
লেবার মুসলিম নেটওয়ার্ক স্টারমারের বিরুদ্ধে গাজার ২২ লাখ মানুষের ‘সম্মিলিত শাস্তি’ সমর্থনকরার অভিযোগ এনে তাকে ‘এলবিসি’তে তার মন্তব্য প্রত্যাহার ও ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
গাজা অবরোধের অধিকার ইসরায়েলের আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে লেবার নেতা গত সপ্তাহে বিবিসিকে বলেন, “আমি মনে করি ভয়াবহ ও মর্মান্তিক সন্ত্রাসবাদের মুখে নিজেকে রক্ষা করার অধিকার ইসরায়েলের আছে।
গাজায় বোমা বর্ষণ তাকে উদ্বিগ্ন করে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এর দায় হামাসের। এ ব্যাপারে আমাদের স্পষ্ট হতে হবে’।
সোমবার স্যার কির পার্লামেন্টে জোর দিয়ে বলেন যে গাজার বেসামরিক নাগরিকদের “লক্ষ্যবস্তু করা উচিত নয়”, তিনি গাজা উপত্যকায় খাদ্য, পানি এবং বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য মানবিক করিডোরগুলি খোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
স্যার কেইর আরও বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবশ্যই সংঘাতের ‘দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের জন্য প্রচেষ্টা’ চালিয়ে যেতে হবে। আমরা হামাসের নৃশংসতাকে বৃহত্তর অঞ্চলে সংঘাতের অনুঘটক হতে দিতে পারি না। ইসরায়েল ও আরব দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে হবে, পরিত্যাগ নয়।
লেবার নেতা বলেন, “সন্ত্রাসবাদের নিন্দায়, ইসরায়েলের বেদনার সময়ে এবং সমস্ত মানুষের জীবনের মর্যাদার পক্ষে এই হাউসের এক কন্ঠে কথা বলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”