পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সোনালি অধ্যায় ছিল দুই দেশের সরকারের মধ্যে, কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে তা দেখা যায়নি। তিনি চান, দুই দেশের জনগণের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠুক এবং তারা বিশ্বাস করুক যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক খুবই ভালো। আজ সোমবার বিকেলে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনার শাসনামলে দুই দেশের সম্পর্কের সোনালি অধ্যায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “সম্পর্কের সোনালি অধ্যায় ছিল দুই সরকারের মধ্যে। আমরা চাই সুসম্পর্ক জনসাধারণের মধ্যেও বজায় থাকুক, যাতে মানুষ মনে করে সম্পর্ক খুব ভালো। এটি স্বীকার করা ভালো যে মানুষের মাঝে কিছু ক্ষোভ ছিল, যা প্রশমন করা সম্ভব।”
বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদলের ফলে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হওয়ার বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তৌহিদ হোসেন বলেন, “এ দুটি ধারণার কোনো একটাকেও আমি ঠিক মানছি না। আমার মতে, কোনো এক পর্যায়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক কিছুটা টানাপোড়েন ছিল, কিন্তু যদি সেটা একটি স্বাভাবিক সম্পর্কের দিকে যায়, তাহলে আমাদের খুশি হওয়া উচিত। আমরা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই, আর পাকিস্তানের সঙ্গে শত্রুতা করে এখন আমাদের কোনো লাভ নেই।”
তৌহিদ হোসেন আরও বলেন, “আপনারা যদি মনে করেন ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক কিছুটা টানাপোড়েন চলছে, তবে সেটি আমাদের দ্বিপক্ষীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে। আমরা মনে করি সম্পর্ক মানুষের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে, যেন মানুষও মনে করে সম্পর্ক ভালো।”
ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে দূরত্ব তৈরি হওয়ায় বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এটা এখন বিচার করা সম্ভব না। আমরা একটা পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি, এবং এ মুহূর্তে আমি কোনো তাৎক্ষণিক সমস্যা দেখছি না। ভবিষ্যতে এটি বিচার করা যাবে।”
বাংলাদেশ বিষয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, “ভারতীয় গণমাধ্যমে যা হয়েছে, তা একেবারে ‘মিথ্যার বেসাতি, বাড়াবাড়ি’। কিছু বিশৃঙ্খলা ছিল এবং সেখানে কিছু দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে, কিন্তু ভারতীয় গণমাধ্যম যেভাবে বিষয়টি প্রচার করেছে, তা মেনে নেওয়া কঠিন।”
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এখনো দিল্লিতে আছেন কি না বা তিনি অন্য কোথাও চলে গেলে তা জানতে পারবেন কি না, এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “ওনার সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ নেই। উনি যদি অন্য কোনো দেশে চলে যান, তা তো আপনারা নিজেরাই জানতে পারবেন, গণমাধ্যমের মাধ্যমে।”
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে শেখ হাসিনা সরকারের সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর টানাপোড়েন চলছিল বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি বলেন, “যেসব ইস্যুতে টানাপোড়েন চলছিল, সেগুলো সরকারের এজেন্ডার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমি চূড়ান্তভাবে কোনো দ্বন্দ্বের সুযোগ দেখি না।”