বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বক্তব্যকে ইঙ্গিতপূর্ণ এবং উস্কানিমূলক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর রামপুরায় ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ আয়োজিত আওয়ামী ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণঅভ্যুত্থানে নিহত রিক্সাচালক সাগরের পরিবারকে আর্থিক অনুদান দেয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, “একটি বিষয় আমি অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছি, ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং ভারতীয় সেনাবাহিনীর কমান্ডারদের সঙ্গে বৈঠকে বলেছেন যে, যুদ্ধের মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে হবে। এটা তাদের দেশের ব্যাপার, তাদের দেশের নিরাপত্তার ব্যাপার।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের উদ্বেগের বিষয় যা আমাদের আশঙ্কার সৃষ্টি করেছে, তিনি বলেছেন যে রাশিয়া-ইউক্রেন, হামাস ও বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশে তো কোনো যুদ্ধ হচ্ছে না। এখানে শতাব্দীর সেরা গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটানো হয়েছে। এটা আমাদের নিজস্ব বিষয়। আমাদের উপর দানব চেপে বসেছিল, আমাদের রক্ত চুষে খাচ্ছিল। জনগণের পকেট কেটে তারা হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। সেই দানব সরকারকে ছাত্র-জনতা আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের রক্ত দিয়ে লড়াই করেছে। আন্দোলন করেছে এবং সেই আন্দোলনের মুখে দানব সরকারের প্রধান পালিয়ে গেছে। এখন বাংলাদেশের স্বাভাবিক পরিস্থিতি বিদ্যমান। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। রাজনাথ সিং রাশিয়া-ইউক্রেন, ইসরাইল, হামাসের সঙ্গে বাংলাদেশের নাম বলা ইঙ্গিতপূর্ণ এবং উস্কানিমূলক। এ বিষয়ে বাংলাদেশের সকল ছাত্র-জনতাকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।”
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, “নানা ধরনের দুরভিসন্ধি এখনও চলছে। যারা পরাজিত হয়েছেন তাদের কাছে বিপুল পরিমাণ কালো টাকা আছে। বিগত ১৬ বছরে এই কালো টাকা তারা কামিয়েছে। এখন তারা এই কালো টাকা ব্যবহার করে নানা ষড়যন্ত্র করছে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের নানা ভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। গোটা দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য তারা গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে দেশকে দুর্যোগের মধ্যে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করছে। দেশবাসীকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আশুলিয়ায় শ্রমিকদের উস্কানি দেয়ার চেষ্টা করছে এই অশুভ শক্তি। তাদের প্রতিরোধ করতে হবে।”
রিজভী বলেন, “বিগত ১৬ বছরে প্রায় ১০০টি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে এবং ভারতের আদানি গ্রুপের সঙ্গে খসড়া চুক্তি বা শর্ত স্বাক্ষর করে তাদের সঙ্গে হাজার হাজার কোটি টাকা লেনদেন করা হয়েছে। কারণ তাদের মধ্যে পার্সেন্টেজের ব্যাপার রয়েছে, টেবিলের নিচ দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। কোনো প্রকার শর্ত ছাড়াই তারা চুক্তি করেছে।”
এ সময় বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জাহিদুল কবির, যুবদল নেতা মেহবুব মাসুম শান্ত, ডা. আব্দুল আউয়াল, আরিফুর রহমান তুষার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।