মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম শুক্রবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা সফর করেন, যেখানে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন নেতা মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে আলোচনা করেন। ইউনূস, যিনি আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়ার পর দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন, আনোয়ারের সঙ্গে বাণিজ্য, অভিবাসী শ্রমিক এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট নিয়ে আলোচনা করবেন।

আনোয়ারের এক ঘণ্টার সফরে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, অভিবাসী শ্রমিকের সমস্যা এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হবে বলে সরকারি কর্মকর্তাদের এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে জানা গেছে। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউনূস আনোয়ারকে স্বাগত জানান, যেখানে তাকে বন্দুকের স্যালুট এবং লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

এটি ৮ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশে কোনো বিদেশি নেতার প্রথম সফর। এটি ১১ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে মালয়েশিয়ার কোনো নেতার প্রথম সরকারি সফরও বটে। আনোয়ার পাকিস্তান থেকে আসছেন এবং তিনি ৫৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

পরবর্তী বছর, মালয়েশিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলির সমিতির (ASEAN) সভাপতিত্ব করবে, এবং বাংলাদেশ সেই অঞ্চলের সাথে তার বাণিজ্য সম্প্রসারণে আগ্রহী। বাংলাদেশ রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট সমাধানে আসিয়ানের সঙ্গে ক্রমবর্ধমানভাবে জড়িত হতে চাইছে। বর্তমানে, মিয়ানমার থেকে আসা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে অবস্থিত ক্যাম্পগুলিতে বসবাস করছে।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় মালয়েশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার ছিল, যার মোট বাণিজ্য $২.৭৮ বিলিয়নে পৌঁছেছে। বাংলাদেশের অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য মালয়েশিয়া একটি প্রধান গন্তব্য। প্রায় ৮০০,০০০ বাংলাদেশী শ্রমিক মালয়েশিয়ার নির্মাণ, উৎপাদন, বৃক্ষরোপণ এবং পরিষেবা খাতে স্বল্প-দক্ষ কর্মী হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। তবে নিয়োগ প্রক্রিয়া প্রায়ই দুর্নীতির শিকার হয় এবং মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা ও বাংলাদেশী নিয়োগকারী সংস্থাগুলির দ্বারা অধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ব্যাপক।

২০২৩ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৬,০০০ এরও বেশি বাংলাদেশী শিক্ষার্থী মালয়েশিয়ার উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে