বাড়ি বাংলাদেশ “ইসলামি ব্যাংক গ্রাহক ফোরাম” এর পক্ষ থেকে ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি’ র...

“ইসলামি ব্যাংক গ্রাহক ফোরাম” এর পক্ষ থেকে ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি’ র চেয়ারম্যান এর নিকট স্মারক লিপি প্রদান

2
0

ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরাম” এর পক্ষ থেকে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি’র চেয়ারম্যানের নিকট স্মারক লিপি প্রদান করা হয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ফোরামের আহ্বায়ক জনাব আব্দুল হক (সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট, এফবিসিসিআই ও এমডি, হকস্ বে), জনাব আবুল কাসেম হায়দার (সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট, এফবিসিসিআই ও চেয়ারম্যান, ইয়থ গ্রুপ), জনাব নজরুল ইসলাম আলম (এমডি, নিউ অটোগ্ল্যাক্সি), জনাব মোজাম্মেল হক ভূঁইয়া (এমডি, মাইশা ফ্যাশনস্), জনাব আব্দুল মতিন (এমডি, লিপি পেপার মিল) এবং জনাব শাহ্ আলম ভূঁইয়া (এমডি, ভূঁইয়া এসোসিয়েটস লি:)। গ্রাহক ফোরামের নেতৃবৃন্দ দায়িত্ব গ্রহণের জন্য ব্যাংকের চেয়ারম্যানকে অভিনন্দন জানান।

ব্যাংকের বিনিয়োগকারীও গ্রাহকদের আস্থা পুনরুদ্ধার এবং ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসাকে পূণর্গঠনের লক্ষ্যে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে নিম্নোক্ত দাবিসমূহ উপস্থাপন করা হয়।

১. ইসলামী শরীয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং আদর্শে প্রত্যাবর্তন :
ইসলামী শরীয়াহর উপরই ভিত্তি করে ইসলামী ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল এবং ইসলামী ব্যাংকিং-এর ধারণা অনুযায়ী ব্যাংকটি পরিচালিত হয়ে আসছিল। কিন্তু ব্যাংকের দক্ষ ও বিচক্ষণ পরিচালনা পর্ষদকে অপসারণ করে ইসলামী ব্যাংকে এস আলমের দখলদারিত্ব প্রতিষ্ঠার পর এ ব্যাংক শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে অনেক দূরে সরে গেছে। ইসলামী ব্যাংকের মৌলিক কাঠামো এবং বিপুল গ্রাহকদের অনুভূতি ও আস্থার বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে ইসলামী
ব্যাংককে অনতিবিলম্বে শরীয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে।

২. গ্রাহকদের বিনিয়োগ নিয়মিত করণ ও নতুন বিনিয়োগের সুবিধা প্রদান:
ইসলামী ব্যাংক গত কয়েক বছর যাবত চরম অব্যবস্থাপনা এবং অযৌক্তিক মুনাফার হার নির্ধারণ করে কোনো গ্রাহকের উপর ১৬%-১৭% পর্যন্ত মুনাফা আরোপ করে কম্পেনসেশন নির্ধারণ করার কারণে অনেক গ্রাহক/ বিনিয়োগ গ্রহীতার বিনিয়োগ/ব্যবসা সংকটাপন্ন অবস্থায় পতিত হয়। যার ফলশ্রুতিতে বিনিয়োগের কিস্তি পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। ফলে বিনিয়োগ ক্লাসিফাইড হয়ে গেছে। বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় গ্রাহকদের এসব বিনিয়োগ আনক্লাসিফাইড হিসেবে গণ্য করতে হবে এবং বিনিয়োগকৃত টাকার উপর ব্যাংকের প্রফিট এবং কম্পেনসেশন সম্পূণ মওকুফ করে প্রিন্সিপাল এমাউন্টকে ১ (এক) বছর মোরাটোরিয়াম সময়কাল প্রদান করে সর্ম্পূন Blocking সহ ১০ বছরের জন্য সমহারে কিস্তি করে দিতে হবে। ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকদের স্থবির হয়ে পড়া ব্যবসা পূনরায় চালু করার মতো যৌক্তিক নতুন বিনিয়োগ সুবিধা দিতে হবে এবং গ্রাহকদের বিনিয়োগ নিয়মিত করতে হবে । এই ক্ষেত্রে (বিআরপিডি সার্কুলার লেটার নং ৪৪; তারিখ: ১৪ অক্টোবর ২০২৪ এবং অর্থমন্ত্রণালয়ের স্মারক নম্বর: ৫৩,০০,০০০০,৩৩১,৩৬,০০২,১৮,৬৩, তারিখ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সংযুক্তি-১) এর আলোকে আমরা যারা ক্ষতি গ্রস্থ গ্রাহক তাদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।

৩. ব্যাংকের অতি উৎসাহী (শাখা প্রধান) কর্মকর্তা দ্বারা সন্মানিত গ্রাহক হয়রানী বন্ধকরন:
ক্ষতিগ্রস্থ ও স্থবির হয়ে পড়া ব্যবসা/শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যাংক থেকে যথা সময়ে ওয়ার্কিং ক্যাপিট্যাল না পাওয়ায় ব্যবসা/শিল্প সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেনি, নিয়মিত এলসি করতে পারেনি এবং বিনিয়োগকারীগণ যথাসময়ে/নিয়মিতভাবে কিস্তি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়, যার দায়ভার সম্পূণ ব্যাংকের কর্তৃপক্ষের উপর বর্তায়, অথচ এ সকল বাস্তব পরিস্থিতির পরেও কিছু কিছু ব্যাংক কর্মকর্তা আমাদের সন্মানিত গ্রাহকদের ব্যাংকের টাকা আদায়ের লক্ষ্যে যে ধরনের অমানবিক আচরণ করেছে তা কোনো অবস্থাতে একজন সৎ নিষ্ঠাবান বিনিয়োগকারী মেনে নিতে পারেন না। বিশেষ করে ঐ সকল শাখা প্রধানগণের নেতৃত্বে সন্মানিত বিনিয়োগকারীগণের দেওয়া চেক ডিজঅনারসহ মামলার হুমকি প্রদান করে। এতে করে সন্মানিত বিনিয়োগকারীগণকে মানসিক চাপসহ সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্নসহ বিভিন্ন অপতৎরতা বন্ধ করতে হবে। বিনিয়োগকারীগণ সামাজিকভাবে অপমানিত এবং লাঞ্চিত হয়েছে, এ ধরনের হয়রানীমূলক মামলাসহ সবধরনের অপতৎরতা বন্ধ করতে হবে।

৪. অবৈধ ব্যাংক দখলকারী ও লুটেরা এস আলমের অর্থ পাচারের সহযোগী ব্যাংক কর্মকর্তাদের দ্রুত অপসারন করার দাবি :
পতিত স্বৈরাচারী সরকারের দোসর এস.আলম গ্রুপ অবৈধভাবে ইসলামী ব্যাংকে দখল প্রতিষ্ঠার পর চরম অরাজকতা সৃষ্টি করে, ব্যাংকের গ্রাহকদের ব্যবসায়ীকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে এবং সম্পূর্ণ অবৈধভাবে নামে বেনামে একাউন্ট খুলে ব্যাংক থেকে লক্ষ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছে। পক্ষান্তরে আমরা সাধারণ সৎ, নিষ্ঠাবান ও পরিক্ষীত গ্রাহকরা ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট কর্তৃক নানাভাবে বঞ্চিত হয়ে ন্যায্য অধিকার থেকে নিগ্রহের শিকার হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের সাথে ব্যাংকের যেসব দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা জড়িত ছিলেন তাদেরকে চিহ্নিত করে অনতিবিলম্ভে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

৫. পূর্বের পরিচালনা পর্ষদ পুন:প্রতিষ্ঠা:
১৯৮৩ সালে ব্যাংকটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইসলামী ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদ অত্যন্ত দক্ষ, সৎ, আদর্শ ব্যাংকিং জ্ঞানসমৃদ্ধ এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তিদের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত হয়ে আসছিল। যার সুফল আমানতকারী, গ্রাহক, বিনিয়োগকারী গ্রহিতাগণ ভোগ করেছিল এবং ব্যাংকটি দেশের
শ্রেষ্ঠ ব্যাংকের আসন দখল করে সাফল্যের শ্রেষ্ঠ শিখরে পৌঁছেছিল। পক্ষান্তরে পতিত স্বৈরাচারী সরকারের সরাসরি তত্বাবধানে এস আলম গ্রুপ কর্তৃক ব্যাংক লুটেরার দখলে পড়ার পরে তার লুটেরা অদক্ষ ও অযোগ্য ছেলেকে ব্যাংকের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করা হয়। পরিচালনা পর্ষদ অত্যন্ত অসৎ এবং দুনীতিবাজদের হাতে চলে যায়। অযোগ্য ও দুর্বল পরিচালনা পর্ষদ দ্বারা পরিচালনার কারণে এ সাফল্যমন্ডিত ব্যাংকটি দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়। এতে ব্যাংকের কার্যক্রম চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং ব্যাংকের সুনামহানি ঘটে। ব্যাংকের বিশাল সংখ্যক বিদেশী শেয়ার হোল্ডার তাদের শেয়ার বিক্রি করে চলে যায়। গ্রাহক ফোরাম এর পক্ষ থেকে ব্যাংকের পরীক্ষিত ও যোগ্য পরিচালনা পর্ষদকে পুন:প্রতিষ্ঠার জোর দাবি জানানো হয়।

  • প্রেসবিজ্ঞপ্তি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে