“একটা বিশেষ রাজনৈতিক দল এখন পর্যন্ত প্রশাসনের ৫০% দখল নিয়েছে। পুলিশ দখল নিয়েছে ফুল। অধিকাংশ মন্ত্রনালয়ের সচিবরা ৮২ এর ব্যাচের কিংবা ৮১, ৮৩, ৮৪ এর যাদের চাকরি শেষ আরো দশ বছর আগে। এদেরে দিয়ে মূলত খেলাটা খেলছে সিরাজউদ্দিন সাথী এবং জনপ্রশাসন সচিব। সিরাজ উদ্দিন সাথী হচ্ছে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব। সরকারের স্থবিরতার মূল কারিগর। প্রধান উপদেষ্টার কার্যলয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষার নামে দিনের পর দিন বিভিন্ন ফাইল আটকে রাখে, ফলে সরকারে স্থবিরতা বিরাজমান।
এরা চায় না ছাত্ররা ক্ষমতা পাক। জনপ্রশাসন সচিব মোখলেসুর রহমান। জনপ্রশাসনের দায়িত্বে প্রধান উপদেষ্টা থাকায় এবং তিনি যথাযথ সময় দিতে না পারায় সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ মোখলেসুর রহমানের হাতে। সিরাজ উদ্দিন সাথী ও মোখলেসুর রহমান আমলাদের রানিং, এক্টিভ, বঞ্চিত, সৎ, যোগ্য অফিসারদের বাদ দিয়ে তাদের ব্যাচমেট, বন্ধু, ১০-১৫ বছর আগে অবসরে যাওয়াদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে চুক্তিভিত্তিক সচিব হিসেবে পদায়ন করছে। বয়সের ভারে এরা ঠিকমতো দায়িত্ব পালন না করায় সরকারে স্থবিরতা, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ফলে বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষোভের ফলে কর্যক্রম আগাচ্ছে না। এসব নিয়ে অধিকাংশ উপদেষ্টারাই বিরক্ত অবস্থায় আছেন।
একটা উদাহরণ থেকে সহজে ব্যাপারটা বোঝা সম্ভব। আহতদের চিকিৎসার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এমন একজনকে সচিব করা উচিৎ ছিলো যে সক্রিয়তার সাথে কাজ করবে। অথচ সাথী-পান্না-মোখলেসরা তাদের পুরাতন বন্ধু অবসরে থাকা আকমলকে স্বাস্থ্য সচিব করলেন। আকমল দায়িত্ব গ্রহণের ২ মাসে সে ২ বার ট্রেইনিংয়ের নামে বিদেশ সফরে গিয়েছে এবং এখনো দেশের বাইরে। আহতদের আন্দোলনের পর দায়িত্বে অবহেলার কারণে উপদেষ্টাগণ তাকে সরাতে চাইলেও সাথী-পান্না-মোখলেসরা তাদের বন্ধুকে সরাতে দিচ্ছে না। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী ড. সায়েদুর রহমান সহ অন্যান্য চাইলেও সরানো যাচ্ছে না এই অথর্ব সচিবকে।
আমলাদের এই দখলদারিত্ব এবং স্বজনপ্রীতি জনপ্রশাসন অকেজো করে রেখেছে। ব্যক্তিগত পরিচিতি ও সখ্যতার কারণে ফ্যাসিবাদের সময়ের সচিবদের অনেককেই সরাতে নারাজ এই গোষ্ঠী। কোন উপদেষ্টা এদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেই ইউনুসের কানভারী করে সেই উপদেষ্টার উপর খড়গহস্ত হয়। আসিফের মন্ত্রণালয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপের কথাও শোনা গেছে। আসিফের নিয়োগকৃত কর্মকর্তাদের ওএসডি/বদলি করা হয়, দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সেখানে পোস্টিং দিচ্ছে জনপ্রশাসন। উদ্দেশ্য এসব দূর্নীতিগ্রস্ত কর্মকর্তাদের দায়ে আসিফকে ফাঁসানো। এর আগেও একজন কেরানির অভিযোগের ভিত্তিতে তথ্য মন্ত্রনালয়ের একটা দপ্তরের ডেপুটি ডিরেক্টরকে তলব করা হয়। তাদের মূল টার্গেট হইলো এখন ছাত্র উপদেষ্টাদের গায়ে দুর্নীতির ট্যাগ দেওয়া।
একটা বিশেষ রাজনৈতিক দল কর্তৃক ৫ তারিখে দখলকৃত মিডিয়ারা এখন এই প্রোপাগান্ডা চালাবে। একে একে আসিফ, নাহিদ আর মাহফুজকে ধরবে৷ এর সবকিছুর শুরু হইলো স্বরাষ্ট্র আর জনপ্রশাসনে আসিফ নাহিদের প্রো-এক্টিভ ভূমিকা রাখতে চাওয়া। ডিপ স্টেট এই দুইজনকে কোনো লীগারকে ওএসডি করতে দেয় না৷ উলটা হাসান মাহমুদের কাছে বেলজিয়াম ঘুরে আসা তথ্য মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব নজরুলকে তারা আসিফের মন্ত্রনালয়ে পাঠিয়েছে আসিফকে ফাঁসাইতে। তাকেও ওএসডি করতে দেয়নাই। মূলত পুলিশে গুরুত্বপূর্ণ একটা পোস্টে নিয়োগ নিয়েই ঝামেলা বাঁধে। এইটা নিয়েই দ্বন্দের শুরু।
ডিপস্টেট এবং একটা বিশেষ রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে কিছু পুরাতন রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছে ছাত্রজনতার বিরুদ্ধে। তারা ছাত্র উপদেষ্টাদের শেষ করবে কারণ এরাই একমাত্র বাঁধা। ইউনুসের ওপর ছাত্রদের প্রভাব এখন খুব সীমিত হয়ে গেছে। ডিপ স্টেট এবং একটা বিশেষ রাজনৈতিক দলের কথামতই সবকিছু হচ্ছে। ” (সংগৃহিত)
বাংলাদেশে বিপ্লবীদের পরিণতি কখনোই ভালো হয়নি। এইজন্য বাংলাদেশে কোন বিপ্লব ই আসলে সফল হয়নি। এবারের বিপ্লবেও খুব সম্ভবত ফাঁসির দড়ি এগিয়ে আসছে বিপ্লবীদের দিকে। এক দল তো চেয়েও দড়ি পড়াতে পারেনি, এখন আরেকদল সেই দড়ি এগিয়ে নিয়ে আসছে। তবে এইবার যদি এই বিপ্লবীদের আমরা বাঁচাতে না পারি, আর কোনদিন কোন ছেলে বা মেয়ে এই দেশে আর কোন বিপ্লব করবে না।
এবারের বিপ্লবে স্লোগান ছিলো, দিল্লী না ঢাকা? ঢাকা, ঢাকা। দালালি না রাজপথ? রাজপথ,রাজপথ। আপোস না সংগ্রাম? সংগ্রাম, সংগ্রাম। এই লড়াই, সহস্র জীবন – অনন্য রক্ত সাগরে অর্জিত। এ বিপ্লব ব্যর্থ হলে, ঢাকা হেরে যাবে, বাংলাদেশ হেরে যাবে।
প্রথম আলোর বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে প্রতিবিপ্লব ফাঁস হয়েছিল মাত্র। অতি দ্রুততার সাথে অপশক্তি ধেয়ে আসছে। একমাত্র সমাধান জনবিস্ফোরণের পাল্টা আঘাত। ” কশিম বাজার কুটি ” গুড়িয়ে দিয়ে চুপ্পু হটিয়ে বিপ্লবী সরকার গঠন করতে হবে। সংবিধান বাতিল করে ঘাপটি মেরে থাকা চক্র তথা সকল মাফিয়া হঠাতে হবে। মুহূর্তের কালক্ষেপন বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে ।
ইনকিলাব জিন্দাবাদ।