গত সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) শরীয়তপুর ও লক্ষ্মীপুরে পৃথক দুইটি সন্ত্রাসী হামলায় আট সাংবাদিক আহত হয়েছেন। সাংবাদিকদের ওপর এমন ন্যাক্কারজনক হামলার ঘটনায় হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, গতকাল লক্ষ্মীপুরে সন্ত্রাসীর হামলায় চার সাংবাদিক আহত হয়েছেন। সদর উপজেলার গণেশ শ্যামপুর এলাকায় এ ঘটনায় আহতরা হলেন- দৈনিক খবরের কাগজের জেলা প্রতিনিধি রফিকুল ইসলাম, চন্দ্রগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, প্রচার সম্পাদক ফয়সাল মাহমুদ ও আব্দুল মালেক নিরব। তাদের সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অপরদিকে, শরীয়তপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সন্ত্রাসীরা ছুরি, হাতুড়িসহ দেশীয় অস্ত্র দিয়ে সমকালের শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি সোহাগ খান সুজনের ওপর হামলা চালায়। এসময় তাঁকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে সাংবাদিক বিধান মজুমদার, নয়ন ও সাইফুলের ওপর হামলা চালায় তারা। পরে আহতদের সদর হাসপাতালে নিয়ে যান স্থানীয়রা।
মানবাধিকারের সার্বজনীন ঘোষণাপত্রের আর্টিকেল-১৯ এবং রাষ্ট্রীয় বিধি-বিধানানুযায়ী প্রত্যেক সাংবাদিকই তার পেশাগত কাজ স্বাধীনভাবে করার অধিকার রাখে। কোনো সাংবাদিকের কোনো কার্যক্রমে যদি প্রশ্ন তোলার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তাহলে দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু তা না করে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে পেশিশক্তির ব্যবহার করে সাংবাদিকদের ওপর নৃশংস হামলা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন বলে আমরা মনে করি। আমরা সাংবাদিকদের ওপর এমন হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও উদ্বেগ জানাচ্ছি। সেইসাথে হামলার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত গ্রহণপূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে দোষীদেরকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে ও আহতদের সুচিকিৎসাসহ ক্ষতিপূরণ দিতে জোর দাবি জানাচ্ছি। একইসাথে দেশব্যাপী সাংবাদিকরা যেন তাদের পেশাগত কার্যক্রম স্বাধীনভাবে পরিচালনা করতে পারেন সেজন্য তাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অতি দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত জানুয়ারী মাসে অন্তত ১৯ টি হামলার ঘটনায় কমপক্ষে ২৮ জন সাংবাদিক নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। এ সকল ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্ততপক্ষে ১৯ জন, হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন ২ জন ও গ্রেফতার হয়েছেন ১ জন। এছাড়াও ২০২৪ সালে কমপক্ষে ৩০৮ টি হামলার ঘটনায় ৭২৬ জন সাংবাদিক হত্যা, নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হয়েছেন। ১০ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন অন্তত ৪৫৯ জন, লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন ৫৯ জন, হুমকির শিকার হয়েছেন ৪৫ জন, গ্রেফতার ১৯ জন ও ১৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।