লন্ডনের একটি বিশেষায়িত চক্ষু হাসপাতালের সার্জনরা বাংলাদেশের ২০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীর দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করতে সাহায্য করেছেন। গত গ্রীষ্মে দেশে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভে আহত হয়েছিলেন।
লন্ডনের মুরফিল্ডস আই হসপিটালের কনসাল্টেন্ট চক্ষু বিশেষজ্ঞ মাহি মুকিত এবং নিয়াজ ইসলাম গত মাসে ঢাকায় সফরের সময় ১৪ থেকে ৩০ বছর বয়সী ১৫০ জন রোগীকে পরীক্ষা করেন।
এই সব রোগীই ২০২৪ সালের জুলাইয়ে “Students Against Discrimination” আয়োজিত বিক্ষোভে অংশ নিয়ে চোখে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। তাদের অনেকেই গত বছর প্রাথমিক চিকিৎসা পেয়েছিলেন।
মুরফিল্ডসের জ্যেষ্ঠ ভিট্রিওরেটিনাল কনসাল্টেন্ট মি. মুকিত বলেন, “এই মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানোর আমন্ত্রণ পাওয়া ছিল একটি সম্মান, এবং আমাদের সবার জন্য একটি চমৎকার অভিজ্ঞতা।”
তিনি আরও বলেন, “যারা মাসের পর মাস দৃষ্টিশক্তিহীন হয়ে ছিলেন, তাদের দৃষ্টি ফিরিয়ে দিতে পারা এক অসাধারণ গর্বের বিষয়।”
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আমন্ত্রণে ওই বিশেষজ্ঞ সার্জনরা দুই দিনের মধ্যে ২৪ জন রোগীর অস্ত্রোপচার করে তাদের দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করেন।
যাদের অস্ত্রোপচার হয়নি, তাদের জন্য পুনর্বাসন পরিকল্পনা দেওয়া হয়েছে।
চোখের আঘাত
মি. মুকিত জানান, তার চিকিৎসাধীন এক রোগী রোহান উভয় চোখে গুলিবিদ্ধ হন।
“তার দুটো চোখই অন্ধ হয়ে গিয়েছিলো, যার মধ্যে একটি চোখ ছিল আশাহীন। আমরা অন্য চোখে অস্ত্রোপচার করে রেটিনার বিচ্ছিন্নতা ঠিক করি এবং নষ্ট টিস্যু সরিয়ে ফেলি” ।
“আমরা আশাবাদী যে অস্ত্রোপচারের পর তার দৃষ্টিশক্তি ধীরে ধীরে উন্নত হবে।”
কাজ করার সময় বিশেষজ্ঞরা আরও জানতে পারেন যে, ২০ বছর বয়সী এক রোগী মিনহাজের চোখে এখনো গত জুলাইয়ের গুলি রয়ে গেছে।
তার চোখ থেকে গুলি বের করে ক্ষত সারাতে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হয়।
২০২৪ সালের জুলাইয়ে বিক্ষোভ চলাকালে আনুমানিক ১,০০০ মানুষ কোনো না কোনোভাবে চোখে আঘাত পান।
এর মধ্যে প্রায় ৭০০ জন ঢাকার জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে (NIOH) জরুরি চিকিৎসা নেন।