মহাবিশ্বের ‘মৃত্যুর দিন’ জানিয়ে দিলেন বিজ্ঞানীরা — পৃথিবীর জন্য সময় যেন এখন উল্টো দিকে চলছে
Trending
জেরুজালেম, ১৫ জুন ২০২৫:
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইরান তিনটি বড় মাত্রার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ১৩ ও ১৪ জুন—ফলে প্রাণহানি, ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক উদ্বেগ চরমে পৌঁছেছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রায় ২০০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে, যার একটি বড় অংশ ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা প্রতিহত করা হলেও, বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র বসতবাড়ি ও জনবহুল এলাকায় আঘাত হানে।
রিশন লেজিয়ন ও রামাত গানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে একজন নারী ও একটি শিশু রয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ৮০ জন, যাদের মধ্যে কেউ কেউ আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে একটি তিন মাসের শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে, যেটি ইতোমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
হামলার পরপরই ইরান দাবি করে, এটি ইসরায়েলের ‘অবৈধ ও আগ্রাসী’ পারমাণবিক হামলার জবাব। ইরানের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শত শত ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের সামরিক ও কৌশলগত অবস্থান লক্ষ্য করে ছোড়া হয়েছে। তবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, প্রকৃত সংখ্যা ছিল তার চেয়ে অনেক কম।
তেল আভিভ ও আশপাশের শহরগুলোতে বিস্ফোরণের শব্দে জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আকাশে ধোঁয়ার কুন্ডলী ও ভাঙা ভবনের দৃশ্য এখন দৈনন্দিন বাস্তবতা হয়ে দাঁড়িয়েছে। উত্তর ইসরায়েলের একটি শহরেও ক্ষেপণাস্ত্রের টুকরো পড়ে বড় ধরনের কাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে।
এই হামলার জবাবে ইসরায়েল দ্রুত পাল্টা আক্রমণ চালায়। দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী (IDF) তেহরানে অবস্থিত ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সদর দপ্তরসহ একাধিক সামরিক স্থাপনা ও তেলক্ষেত্রে হামলা চালায়। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কায এক বিবৃতিতে জানান, “ইরান লাল রেখা অতিক্রম করেছে—তাদের জবাব দিতেই হবে।”
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি ইসরায়েলের হামলাকে “যুদ্ধ ঘোষণা” হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, “সায়োনিস্ট সরকার এর কঠিন মূল্য দেবে।” এর আগে, ইরান ১০০টির বেশি ড্রোন ইসরায়েলের দিকে পাঠিয়েছিল, যা ইসরায়েলি ও মার্কিন প্রতিরক্ষা যৌথভাবে প্রতিহত করেছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা ঘিরেও বিতর্ক শুরু হয়েছে। ইরান অভিযোগ করছে, ইসরায়েলের এই হামলাকে যুক্তরাষ্ট্র পরোক্ষভাবে সহায়তা করেছে। যদিও ওয়াশিংটন জানিয়েছে, তারা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা সহায়তা দিয়েছে, কিন্তু হামলায় সরাসরি অংশ নেয়নি।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এই পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। ইউরোপীয় শক্তিগুলো—যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ও জার্মানি—ইরানকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছে, তবে তেহরান স্পষ্ট জানিয়েছে, এখন আর আলোচনার পরিবেশ নেই। বরং ইরান আরও আগ্রাসীভাবে তাদের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ ও ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন অব্যাহত রাখবে বলে জানিয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিস্থিতি এখন চরম উত্তেজনাকর পর্যায়ে পৌঁছেছে। যদি সংঘাত আরও তীব্রতর হয়, তাহলে তা শুধু ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না—বরং গোটা মধ্যপ্রাচ্য ও বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সরবরাহ এবং কূটনৈতিক সম্পর্কেও গভীর প্রভাব ফেলবে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, ইসরায়েল ও ইরান—উভয়পক্ষই আরও প্রতিশোধ ও জবাবের প্রস্তুতি নিচ্ছে। বিশ্ব এখন শ্বাসরুদ্ধ অবস্থায় অপেক্ষা করছে—এর পর কী হবে।