বাংলাদেশের মানুষের জীবনমানে অনেক উন্নতি হয়েছে। নানা ক্ষেত্রে দেশটি এগিয়েছে। কিন্তু দুর্ণীতি, গণতন্ত্র, স্বাধীন, গণমাধ্যম, মানবাধিকার ইত্যাদি নানা বিষয়ে রয়ে গেছে চ্যালেন্জ। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছরে কুইম্যারী ইউনিভার্সিটি হলে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে নির্ধারিত বক্তারা এসব কথা বলেন। মহান স্বাধীনতার ৫০ বছরে লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের ছিলো এই আয়োজন। ৭১-এ বৃটিশ মিডিয়ার ভূমিকা, বাংলাদেশের প্রেস ফ্রিডম এবং ৫০ বছরের অর্জন এবং চ্যালেনজ নিয়ে ছিলো তিনটি উপস্থাপনা।
কুইন ম্যারী আর্টস স্টুডিও হলের এই অনুষ্ঠানে ৫০ বছরের গণমাধ্যম শীর্ষক আলোচনায় স্বাধীনতার একটি চিত্র তুলে ধরেন বিবিসিখ্যাত প্রবীন সাংবাদিক উদয় সংকর দাস।
৯ নভেম্বর মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশ ওয়ার অব ইন্ডিপেনডেন্স: রোল অব মিডিয়া ইন দ্য ইউকে‘ শীর্ষক উপস্থাপনা ছিলো ই-সাউথ এশিয়া সম্পাদক বুলবুল হাসানের।
ফিফটি ইয়ার: এচিভম্যান্ট এন্ড চ্যালেঞ্জ‘ শীর্ষক উপস্থাপনা চ্যানেল এস-এর হেড অব প্রোগ্রাম ফারহান মাসুদ খানের।
প্রেস ফ্রিডম শীর্ষক আলোচনায় প্রবীণ সাংবাদিক উদয় শঙ্কর দাশ বলেন, স্বাধীন দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য সব সময়ই সংগ্রাম করতে হয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে দেশের গণমাধ্যম আরও বেশী চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। আর শ্বৈরশাসনের সময়ে ছিলো চরমভাবে নিয়ন্ত্রিত। তিনি আরো বলেন, গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ মোকাবেলার মোক্ষম জবাব হচ্ছে আরও বেশি সক্রিয় সাংবাদিকতা। যত বাধাই আসুক সাংবাদিকতার কাজটা ঠিকঠাক চালিয়ে যেতে হবে সাংবাদিকদের।
বুলবুল হাসান ভিডিও ও পেপার ডকুমেন্ট উপস্থাপন করে জানান, বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির সংগ্রামে বিশ্ববাসীর সমর্থন আদায়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যমের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।
ফারহান মাসুদ খান বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে জিডিপি, মাথাপিছু আয়, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, শিক্ষার হারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ চমৎকার অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে দুর্নীতি মোকাবেলা, মানসম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা এবং গণতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকরণে চ্যালেঞ্জ এখনও দেশের কাঙ্খিত অগ্রগতির পথে বাধা।
লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের সেক্রেটারী মুহাম্মদ জুবায়েরের পরিচালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্লাব প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী, সমাপনী বক্তব্য ভাইস প্রেসিডেন্ট তারেক চৌধুরী। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার আ স ম মাসুম, সার্বিক তত্ববধানে ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের আর্টস অফিসার কাজী রুকসানা বেগম।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজন্তী উদযাপনের অংশ হিসেবে প্রেসক্লাবের এই আয়োজনের সহযোগি ছিলো টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের এ সিজন অব বাংলা ড্রামা প্রজেক্ট।
অনুষ্ঠানের শেষদিকে ছিলো ব্যতিক্রমী লং টেবিল ডিসকাশন। এতে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকতার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা মন্তব্যে অংশ নেন ১০ জন আলোচক। ক্লাব প্রেসিডেন্ট ছিলেন হোস্ট। এতে তিন নির্ধারতি বক্তা ছাড়াও যোগ দেন এশিয়ান এইজ-এর সাবেক সম্পাদক বদরুল আহসান, সাপ্তাহিক সুরমার
সম্পাদক শামসুল আলম লিটন, সাপ্তাহিক পত্রিকার প্রধান মোহাম্মদ সম্পাদক বেলাল আহমদ, যমুনা টিভির বিশেষ প্রতিনিধি মাহফুজ মিশু, লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের আইটি সেকেটারী সালেহ আহমদ
এবং নির্বাহী সদস্য নাজমুল ইসলাম।
ইসি মেম্বারদের অংশগ্রহণে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। এতে আলোচনার বিরতিতে দেশাত্ববোধক গান পরিবেশন করেন প্রেসক্লাবের নির্বাহী সদস্য রুপি আমীন, সদস্য মোস্তফা কামাল মিলন ও পাপ্পু।