বিবিসি বাংলাঃ ‘গুরুতর মানবাধিকার লংঘনমূলক কাজে জড়িত থাকার’ অভিযোগে বাংলাদেশের বিশেষ পুলিশ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং এর ছয়জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন অর্থ দফতরের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, শুক্রবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসের এই দিনে মার্কিন অর্থ দফতরের ফরেন অ্যাসেটস কনট্রোল অফিস (ওএফএসি) বিভিন্ন দেশের মোট ১০টি প্রতিষ্ঠান ও ১৫ জন ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে – যারা মানবাধিকার লংঘন এবং নিপীড়নের সাথে সংশ্লিষ্ট।
এই তালিকাভুক্তদের অন্যতম হচ্ছে বাংলাদেশের র্যাব ও এর ছয়জন কর্মকর্তা।
ছয় জন র্যাব কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লিখিত ছয় জন কর্মকর্তা হচ্ছেন: চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন (র্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক), বেনজির আহমেদ (সাবেক র্যাব মহাপরিচালক, জানুয়ারি ২০১৫-এপ্রিল ২০২০), খান মোহাম্মদ আজাদ (বর্তমান অতিরিক্ত মহাপরিচালক-অপারেশন্স), তোফায়েল মুস্তাফা সরওয়ার (সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক-অপারেশন্স, জুন ২০১৯-মার্চ ২০২১), মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক-অপারেশন্স, সেপ্টেম্বর ২০১৮-জুন২০১৯), এবং মোহাম্মদ আনোয়ার লতিফ খান (সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক-অপারেশন্স, এপ্রিল-২০১৬-সেপ্টেম্বর ২০১৮)।
এতে বলা হয়, গুরুতর মানবাধিকার লংঘনে জড়িত থাকার জন্য আজ বেনজির আহমেদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপ করার কথা ঘোষণা করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর – যার ফলে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অযোগ্য হবেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া
এ ব্যাপারে র্যাবের দিক থেকে এখনও কোন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায় নি।
তবে বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা কাদির কল্লোলের সাথে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের কথা হয়েছে। মন্ত্রী তাকে বলেছেন, তারা এখনো বিজ্ঞপ্তিটি দেখেননি, এবং দেখার পর প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।
‘প্রায় ৬০০ বিচারবহির্ভূত হত্যা’
বিজ্ঞপ্তিটিতে বলা হয়, বাংলাদেশের বেসরকারি সংগঠনগুলো অভিযোগ করেছে যে র্যাব এবং অন্যান্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ২০০৯ সাল থেকে প্রায় ৬০০টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ৬০০-রও বেশি লোকের অদৃশ্য হয়ে যাওয়া, এবং নির্যাতনের জন্য দায়ী।
কিছু রিপোর্টে আভাস পাওয়া যায় যে এসব ঘটনায় বিরোধীদলীয় সদস্য,সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীদের টার্গেট করা হয়েছে – বলা হয় বিজ্ঞপ্তিতে।
এতে ‘গুরুতর মানবাধিকার লংঘনমূলক কাজে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার’ অভিযোগে বাংলাদেশের বিশেষ পুলিশ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং এর ৬ জন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কথা বলা হয়।
এতে বলা হয়, “বাংলাদেশে মাদকবিরোধী অভিযানের সময় র্যাবের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লংঘনের ব্যাপক অভিযোগ – আইনের শাসন, মানবাধিকার, মৌলিক স্বাধীনতা, ও বাংলাদেশের জনগণের অর্থনৈতিক উন্নয়নকে হেয় করার মাধ্যমে – মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা স্বার্থকে হুমকির মুখে ফেলছে।”