কমিউনিটি নিউজ ডেস্ক: দেশের বিশিষ্ট আইনজীবি, ঢাকা জেলার সাবেক জেলা প্রশাসক, বিসিএস (প্রশাসন) অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব, সাবেক তথ্য সচিব, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও ‘শেরপুর ওয়েলফেয়ার এন্ড ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশন ইউরোপ’ এর বাংলাদেশস্থ অপারেশন আহবায়ক কমিটির সন্মানিত সদস্য ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হায়দার আলী আজ ২৪শে জুলাই রবিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১০ ঘটিকায় রাজধানী ঢাকার ধানমন্ডি ইবনে সিনা হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয়ে তিনি রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গতকাল রাত ১টার দিকে গুরুতর সমস্যা দেখা দিলে তাকে খুব জরুরি ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই তিনি আজ দিবাগত রাত আনুমানিক ১০:০৫ মিনিটে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র ও এক কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।
আগামীকাল সোমবার বাদ জোহর শেরপুর জেলার নকলা থানার সেনের কান্ধা ইদগাহ মাঠে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে এবং জানাজা শেষে ভোট কান্ধি গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।
এদিকে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হায়দার আলীর মৃত্যেু সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে শেরপুর জেলার সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে। জেলার একমাত্র দৈনিক ‘দৈনিক তথ্যধারা’ সম্পাদক ও প্রকাশক মো: জাহাঙ্গীর আলম খান, সাবেক এমপি ও জেলা বিএনপি সভাপতি মাহমুদুল হক রুবেল, সাবেক এমপি রফিকুল বারী চৌধুরী, জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক এমপি, জেলা আইনজীবি সমিতির সভাপতি মোখলেছুর রহমান, শেরপুর জেলা ও থানা প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ এবং অন্যান্য রাজনৈতিক, ধর্মীয় ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।
ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হায়দার আলীর হঠাৎ মৃত্যুর খবর শোনে শেরপুর ওয়েলফেয়ার এন্ড ডেভেলপমেন্ট এসোসিয়েশন ইউরোপের নেতৃবৃন্দ গভীর শোক ও দু:খ প্রকাশ করেছেন। শোক বার্তায় নেতৃবৃন্দ মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, আত্মীয় স্বজন, সহকর্মী, গুণগ্রাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। শোক বার্তায় নেতৃবৃন্দ বলেন, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হায়দার আলী একজন অত্যন্ত ভালো মানুষ ছিলেন, গুণী মানুষ ছিলেন, সৎ ও আদর্শবান মানুষ ছিলেন। তথ্য সচিব হিসেবে অবসর নেওয়ার আগ পর্যন্ত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে অত্যন্ত সততা, দক্ষতা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন, দেশের মানুষকে সর্বোচ্চ সেবা দিয়েছেন। তিনি বহু লোকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাসহ এলাকায় বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ ও সহযোগিতা করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে শেরপুর জেলাবাসীর অপূরণীয় ক্ষতি হলো। আমরা মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি, আল্লাহপাক যেনো তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করেন।
সাবেক তথ্য সচিব ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হায়দার আলীর অকাল মৃত্যুতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান গভীর শোক প্রকাশ করেন। আজ এক শোকবার্তায় বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “সাবেক তথ্য সচিব, রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হায়দার আলীর মৃত্যুতে তাঁর শোকার্ত পরিবারবর্গের মতো আমিও গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর মৃত্যুতে আমি গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি। তথ্য সচিবের পদ থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি মহান স্বাধীনতার ঘোষক ও বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এর বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী দর্শনে অনুপ্রাণিত হয়ে বিএনপি’র রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। নিষ্ঠা ও সাহসিকতার সাথে অগণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে তাঁর নির্ভিক নেতৃত্ব সহকর্মীদের প্রেরণা যুগিয়েছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে তাঁর অবদানের জন্য তিনি দলের নেতাকর্মীদের নিকট চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। অবসর গ্রহণের পর রাজনীতি ছাড়াও তিনি নানা সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রেখেছিলেন। শেরপুর জেলাবাসীসহ দেশবাসী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র নেতাকর্মীরা তাঁকে চিরদিন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। তাঁর মৃত্যু জাতীয়তাবাদী শক্তির জন্য অত্যন্ত ক্ষতি ও মর্মস্পর্শী। আমি তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গ, গুণগ্রাহী, সহকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি ।”
উল্লেখ্য, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হায়দার আলী কর্মজীবনে সরকারের তথ্য, বস্ত্র ও পাট, মহিলা ও শিশু, পরিবেশ ও বন এবং ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি টিম লিডার হিসেবে ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, ফ্রান্স, কেনিয়া, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, কেনিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ সালে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের পদ থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আহবানে বিএনপিতে যোগদান করেন এবং তিনি নিজ জেলা শেরপুরের নকলা-নালিতাবাড়ী থানা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির সভা সমাবেশ ও টকশোতে অংশ নেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে অনার্সসহ মাস্টার্স শেষ করে যুক্তরাজ্যে এলএলবি অনার্স করেন এবং লন্ডনের বিখ্যাত লিংকনস ইন থেকে ব্যারিস্টার এট ল ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর তিন সন্তানের তিনজনই ব্যারিস্টার।