লন্ডন, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২:
১৯৭১ সালের ১লা সেপ্টেম্বর বৃহত্তর সিলেটের জগন্নাথপুর উপজেলাধীন ভাটি অঞ্চলের অন্যতম নৌবন্দর রানীগঞ্জ বাজার গণহত্যা দিবস উপলক্ষে শহীদ গাজী ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) পূর্ব লন্ডনের ব্রিকলেনে এক স্মরণসভার আয়োজন করা হয়. ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শহীদ সন্তান সাংবাদিক আকবর হোসেন এর সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন অক্সফোর্ড এর বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা লুৎফুর রহমান, রফু মিয়া, শহীদ মিসির আলীর ছেলে এনাম আলী, আবুল হোসাইন, মঈনুদ্দিন, সাংবাদিক রহমত আলী, আনোয়ার শাহজাহান, নাজমুল হোসেন, ইয়াওর উদ্দিন, রফিকুজ্জামান, শহীদ আব্দুল মজিদ এর নাতি সাইফুল ইসলাম বিপ্লব ও হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে রাণীগঞ্জ এলাকাবাসী ও শহীদ পরিবারের সন্তানেরা অংশগ্রগণ করেন। তারা নিজেদের পরিবারের সদস্যদের পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী দ্বারা নৃশংস হত্যাকান্ড এর কথা স্মৃতি চারণ করেন। প্রত্যক্ষদর্শির কাছ থেকে বর্ণনায় সেখানে এক আবেগ ঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়.
এছাড়াও জুম এর মাধ্যমেও বাংলাদেশ ও ইউকে থেকে এলাকার বিশিষ্টজনেরা অংশগ্রহণ করেন।
আলোকচিত্রী আবুল আসাদ আফজাল সম্প্রতি রানিগঞ্জের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্রএকিট প্রদর্শন করেন। এতে গণহত্যা নিয়ে এলাকার মানুষের স্মৃতিচারণ ওঠে আসে.
সংগঠনের চেয়ারম্যান আকবর হোসেন সবাইকে স্বাগত জানান এবং রানীগঞ্জ গণহত্যার উপর পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেনটেশন দেন.
সভায় বক্তারা গণহত্যায় নিহত সকল শহীদ ও আহতদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ এবং সদ্য সমাপ্ত রানীগঞ্জ সেতুকে ১৯৭ ১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে গঞ্জ গণহত্যায় নিহত শহীদদের নামে উৎসর্গের দাবী জানান। তারা শহীদ-গাজী মনুমেন্ট, শহীদ ওয়াল, শহীদ স্মৃতি শিশু পার্ক, শহীদ গার্ডেন, শহীদ টাওয়ার জাতীয় স্মৃতি ফলক তৈরিরও দাবি জানান। এতে তারা শহীদ-গাজী স্মরণে স্মরণিকা প্রকাশের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।
এদিকে শহীদ গাজী ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে একটি ওয়েবসাইট ও ডকুমেন্টারী তৈরির কাজ চলছে বলে জানানো হয়. আগামীতে বড় পরিসরে দেশে এবং লন্ডনে বৃহৎ আকারে একটি স্মরণ সভা আয়োজনের কথা ও জানানো হয়.
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে লুৎফুর রহমানকে আহব্বায়ক এবং আকবর হোসেনকে সদস্য সচিব করে শহীদ গাজী ফাউন্ডেশন ইউকে কমিটি গঠনের লক্ষে একটি আহ্বায়াক কমিটি গঠন করা.
স্মরণসভা সফল করার জন্য শহীদ গাজী ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়. শেষে সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দুয়া করা হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৭১ সালের ১ লা সেপ্টেম্বর পাক হানাদার বাহিনী রাজাকারদের সহোযোগিতায রানীগঞ্জ বাজারে শতাধিক মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করে এবং বাজারের দোকানপাঠ জ্বালিয়ে দেয়.