বাড়ি লাইফস্টাইল নাইজেরিয়ার হারানো শহর

নাইজেরিয়ার হারানো শহর

143
0

উত্তর-পূর্ব নাইজারের মরুভূমি জুড়ে একটি দীর্ঘ চলার পথ দর্শনার্থীদের সাহারার বালি দিয়ে ঘেরা এক বিস্ময়কর গ্রামে নিয়ে আসে। পাথরে প্রোথিত লবণ এবং কাদামাটির তৈরীর গ্রামগুলি সাহেলের সবচেয়ে দর্শনীয় স্থান । 

প্রজন্মের পর প্রজন্মের পর্যটকরা জাডোর কসারের দেয়াল, প্রহরী টাওয়ার, গোপন সুড়ঙ্গ, পানির কূপগুলো দেখে বিস্ময় নিয়ে ভেবেছে কোন অজানা দক্ষ হাতের তৈরী এগুলো।

প্রত্যন্ত অঞ্চলে কারা এই চৌকি নির্মাণ করেছিল এবং তারপর পরম অবহেলায় তা ফেলে চলে গেছে? এ এমন এক পূরনো প্রশ্ন যার জবাব মেলেনি আজো। 

রহস্য ভেদ করতে কোন প্রত্নতাত্ত্বিক খনন বা বৈজ্ঞানিক ডেটিং করা হয়নি।

কসার জাদো কাওয়ার মরুদ্যান অঞ্চলে অবস্থিত। রাজধানী নিয়ামে থেকে ১,৩০০ কিলোমিটার (৮০০ মাইল) দূরে, লিবিয়ার সাথে সংকটপূর্ণ সীমান্ত  এবং নাইজারের গভীরে অবস্থিত।

একসময় সাহারা জুড়ে কাফেলার বাণিজ্যের চৌরাস্তা ছিল এটি। কাওয়ার আজ মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানের অভয় রাজ্য। এর ভয়াবহ খ্যাতি প্রচন্ড সাহসী ভ্রমণকারী ছাড়া আর সবাইকে নিরুতসাহিত করে।

লাউয়েল চিরফার মেয়র সিদি আবা বলেন, “২০০২ সাল থেকে কোনও বিদেশী পর্যটক আসেনি,”। তিনি বলেন, ‘যখন পর্যটন ভালো ছিল, তখন অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ছিল কমিউনিটির জন্য”।

২০১৪ সালে  সোনা আবিস্কৃত হবার পর নতুন এক আশাবাদ তৈরী হয়েছিল।  সারা আফ্রিকা থেকে শ্রমিকরা এসেছে। জীবনের ছোয়া লেগেছিল। অর্থনৈতিক মুক্তির সাথে পাহাড়ের গর্তে আশ্রয় নেয়া দস্যুরাও ভর করেছিল।

নবাগতদের মধ্যে খুব কমই কসার দেখতে আগ্রহী ছিল। মেয়র স্থানীয় ইতিহাস সম্পর্কে কথা বলার সময় সতর্ক হন, স্বীকার করেন তাঁর জ্ঞানের অনেক ঘাটতি আছে।

ত্রয়োদশ থেকে পঞ্চদশ শতাব্দীর মধ্যে কানুরি জনগোষ্ঠী কসার এলাকায় বসতি করে। তাদের মরু সভ্যতা অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে একের পর এক যাযাবর আক্রমণকারী যেমন  তুয়ারেগ, আরব এবং অবশেষে টুবুদের আঘাতে প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়  ।

বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে প্রথম ইউরোপীয় আক্রমণকারীদের বিরুদ্ধে কসারদের শেষ  প্রতিরক্ষা ভেঙ্গে পড়ে। ১৯২৩ সালে ফরাসি সামরিক বাহিনী এই এলাকা দখল করে নেয়।

আজ, কানুরি এবং টুবুরা  এক হয়েছে। তবে এই অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী নেতারা, যাদের মাই বলা হয়, এসেছেন কানুরি বংশ থেকে ।

তারা ঐতিহ্যের ধারক হিসাবে কাজ করে।  পাশাপাশি মৌখিক ইতিহাসের রক্ষক হিসাবেও ভূমিকা রাখে । কিন্তু এই রক্ষকদের জন্যও অনেক কিছু রয়ে গেছে রহস্যে ঘেরা।

কানুরি নেতা কিয়ারি কেলাউয়ি আবারি চেগু বলেন “এমনকি আমাদের দাদারাও তা জানতেন না। আমরা রেকর্ড রাখিনি,” ।  

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে