শেখ হাসিনাকে ফেরানোর অনুরোধ না জানানো পর্যন্ত তাঁর চুপ থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন এবং সেখানে আশ্রয়লাভের চেষ্টা করছেন।
ভারতের সংবাদমাধ্যম পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনার বিভিন্ন রাজনৈতিক বিবৃতি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ড. ইউনূস। আজ বৃহস্পতিবার পিটিআই নিউজের ওয়েবসাইটে এই সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়।
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশে ফেরানোর দাবি না হওয়া পর্যন্ত ভারতের অবস্থানকালে শেখ হাসিনার চুপ থাকা উচিত।” তিনি আরও বলেন, “তিনি ভারতে বসে কথা বলছেন, যা সমস্যা তৈরি করছে। তিনি যদি চুপ থাকতেন, তাহলে সবাই বিষয়টি ভুলে যেত। কিন্তু ভারতে থেকেও তিনি বক্তব্য দিচ্ছেন, যা কারোই ভালো লাগছে না।”
ড. ইউনূস হাসিনার কথাবার্তাকে ‘অবন্ধুসুলভ’ আখ্যা দিয়ে বলেন, “তাঁর চুপ থাকা উচিত, কারণ তিনি যে বক্তব্য দিচ্ছেন, তা আমাদের জন্য বন্ধুসুলভ নয়। তিনি সেখানে আশ্রয় পেয়েছেন, কিন্তু সেখানে থেকেও প্রচার চালাচ্ছেন। এটা স্বাভাবিক পরিস্থিতি নয়, কারণ তিনি গণ-অভ্যুত্থানের মুখে পালিয়েছেন।”
গত ১৩ আগস্ট হাসিনার এক বিবৃতির প্রেক্ষিতে ড. ইউনূস এসব মন্তব্য করেন। হাসিনা ওই বিবৃতিতে সাম্প্রতিক সহিংসতা, হত্যাকাণ্ড এবং লুটপাটের বিচার দাবি করেছিলেন। ড. ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশ তাঁকে ফেরত আনবে, কারণ জনগণ তা চায়। তাঁর নিষ্ঠুরতার জন্য তাঁকে বিচার কাঠগড়ায় দাঁড় করানো দরকার।”
ড. ইউনূস ভবিষ্যতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “ভারতের উচিত শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্থিতিশীল থাকবে—এমন ধারণা থেকে বেরিয়ে আসা।” তিনি আরও বলেন, “ভারতকে বুঝতে হবে যে বাংলাদেশ আরেকটি প্রতিবেশী দেশ, এবং শুধু শেখ হাসিনার অধীনে নয়, অন্যান্য নেতৃত্বের অধীনেও বাংলাদেশ স্থিতিশীল হতে পারে।”
ভারতে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার অভিযোগ এবং এ নিয়ে ভারতের উদ্বেগ সম্পর্কে ড. ইউনূস বলেন, “এটি একটি অজুহাত মাত্র।” তিনি সংখ্যালঘুদের অবস্থাকে ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে উপস্থাপন করার সমালোচনা করেন।
শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট ইতিমধ্যে বাতিল করা হয়েছে, যা তাঁর ভারতে অবস্থান ও সম্ভাব্য প্রত্যর্পণ নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছে।