ভারত মার্চ মাসে পাকিস্তানে ভুলবশত একটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের ঘটনার পর তিনজন বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছে, যা দুই পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশীর মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে দেয়। ভারত সরকার প্রাথমিকভাবে “গভীরভাবে দুঃখজনক” এই ঘটনাটিকে রুটিন রক্ষণাবেক্ষণের সময় একটি “প্রযুক্তিগত ত্রুটি” হিসেবে দায়ী করে।
পাকিস্তান এর প্রতিক্রিয়ায় ভারতকে “এ ধরনের অবহেলার অপ্রীতিকর পরিণতি সম্পর্কে সচেতন” থাকতে সতর্ক করে এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়ানোর আহ্বান জানায়।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ভারতীয় বিমান বাহিনী জানায়, ৯ মার্চের ঘটনায় জড়িত কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করা হয়েছে। একটি তদন্তে দেখা গেছে, স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতি (SOP) অনুযায়ী না চলার কারণে ক্ষেপণাস্ত্রটি ভুলবশত নিক্ষেপ হয়েছিল। ক্ষেপণাস্ত্রটি ছিল ব্রাহ্মোস, একটি পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, যা যৌথভাবে ভারত ও রাশিয়া দ্বারা উন্নত।
পাকিস্তানের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্রটি শব্দের তিনগুণ গতিতে (ম্যাক ৩) এবং ১২,০০০ মিটার (৪০,০০০ ফুট) উচ্চতায় উড়ে পাকিস্তানের আকাশসীমায় ১২৪ কিলোমিটার (৭৭ মাইল) প্রবেশ করে বিধ্বস্ত হয়। পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ জানায়, ক্ষেপণাস্ত্রটি বেশ কয়েকটি বেসামরিক ফ্লাইট এবং স্থলভাগের জীবন ও সম্পত্তির জন্য গুরুতর ঝুঁকি সৃষ্টি করেছিল।
ঘটনার পর ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেন, দেশটি তাদের অস্ত্র ব্যবস্থার “নিরাপত্তা ও সুরক্ষাকে” সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয় এবং তদন্তের পরে কোনো ত্রুটি পাওয়া গেলে তা সংশোধন করা হবে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার মূল কেন্দ্রবিন্দু হলো কাশ্মীর, একটি বিতর্কিত অঞ্চল যা উভয় দেশই তাদের দাবি করে কিন্তু আংশিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করে। অঞ্চলগুলো আন্তর্জাতিকভাবে “ভারত-প্রশাসিত কাশ্মীর” এবং “পাকিস্তান-প্রশাসিত কাশ্মীর” নামে পরিচিত। কাশ্মীর নিয়ে দুই দেশ একাধিকবার যুদ্ধ করেছে, এবং ভারত প্রায়ই পাকিস্তানকে ওই অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের সমর্থন করার অভিযোগ করে, যা পাকিস্তান অস্বীকার করে।