৫ লক্ষাধিক মানুষের ওপর পরিচালিত একটি ঐতিহাসিক গবেষণায় দেখা গেছে যে মাত্র ১৩ পয়সার সাপ্লিমেন্ট ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল কমাতে কার্যকর হতে পারে।
খাদ্য পরিপূরকের কার্যকারিতা নিয়ে সাধারণত প্রচুর আলোচনা হলেও, বাস্তবিক ফলাফল প্রায়ই সীমিত। তবে জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নতুন গবেষণা এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছে। গবেষকরা প্রমাণ পেয়েছেন যে ওমেগা-৩ সাপ্লিমেন্ট উচ্চ কোলেস্টেরল কমাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।
দৃষ্টান্তমূলক ফলাফল
The American Journal of Clinical Nutrition-এ প্রকাশিত গবেষণায়, উচ্চ কোলেস্টেরলের জন্য জিনগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে ওমেগা-৩ সাপ্লিমেন্টের প্রভাব বিশ্লেষণ করা হয়। ৪৪১,০০০ এরও বেশি অংশগ্রহণকারীর জেনেটিক ডেটা ব্যবহার করে গবেষকরা একটি স্কোর তৈরি করেন যা মোট কোলেস্টেরল, এলডিএল কোলেস্টেরল (যাকে সাধারণত ‘খারাপ’ কোলেস্টেরল বলা হয়), ট্রাইগ্লিসারাইড এবং এইচডিএল কোলেস্টেরল (যা ‘ভালো’ কোলেস্টেরল নামে পরিচিত) এর জেনেটিক সম্ভাবনা নির্ধারণ করে।
ইয়িতাং সান, জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক্স বিভাগের সদ্য স্নাতক হওয়া গবেষক, বলেন, “জেনেটিক গবেষণায় সাম্প্রতিক অগ্রগতি আমাদের উচ্চ কোলেস্টেরলের জেনেটিক ঝুঁকি পূর্বাভাস দিতে সক্ষম করেছে। তবে, বর্তমান পূর্বাভাসে উন্নতির সুযোগ রয়েছে, কারণ এটি জীবনধারাগত ভিন্নতা, যেমন ফিশ অয়েল সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ, বিবেচনা করে না।”
উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত ফিশ অয়েল সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করেছেন, তাদের রক্তে মোট কোলেস্টেরল, এলডিএল কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা পূর্বাভাসের চেয়ে কম ছিল। গবেষণার সহ-লেখক ও জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক কাইক্সিয়ং ইয়ে বলেন, “আমাদের গবেষণা প্রমাণ করে যে জীবনধারা বিবেচনায় রেখে জেনেটিক পূর্বাভাস আরও নির্ভুল করা সম্ভব।” তিনি আরও বলেন, “ফিশ অয়েল সাপ্লিমেন্ট উচ্চ কোলেস্টেরলের জেনেটিক ঝুঁকিকে প্রতিরোধ করতে সহায়ক হতে পারে।”
অতিরিক্ত উপকারিতা
গবেষকরা আরও দেখেছেন যে ফিশ অয়েল সাপ্লিমেন্ট এইচডিএল বা ‘ভালো’ কোলেস্টেরল বাড়াতেও সহায়ক। যদিও এর সুনির্দিষ্ট কার্যপ্রণালী এখনো অস্পষ্ট, পূর্বের গবেষণায় ডিএইচএ (এক ধরনের ওমেগা-৩) বৃদ্ধির সঙ্গে এলডিএল কোলেস্টেরল হ্রাসের সম্পর্ক পাওয়া গেছে।
তবে, যাদের জেনেটিক ঝুঁকি নেই, তাদের ক্ষেত্রে ওমেগা-৩ সাপ্লিমেন্টের প্রভাব নিয়ে গবেষণা এখনও অসামঞ্জস্যপূর্ণ। ২০১৭ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, তাজা মাছ খাওয়া ফিশ অয়েল সাপ্লিমেন্টের চেয়ে কোলেস্টেরল কমাতে বেশি কার্যকর। এনএইচএস উচ্চ কোলেস্টেরল কমাতে তেলযুক্ত মাছ খাওয়া এবং চর্বিযুক্ত খাবার কমানোর পরামর্শ দিয়েছে।