বাংলাদেশ থেকে ইউকে প্রবাসীদের জন্য অর্ধেক খরচে হজ্ব করার সুবর্ন সুযোগ তৈরী হয়েছে। এই সুযোগ নিতে সকল প্রবাসী মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সিলেট চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও সিপার হজ্ব ও উমরাহ সার্ভিসের স্বত্বাধিকারী খন্দকার সিপার আহমেদ। তিনি জানান, বাংলাদেশের কোটা থেকে ৪২ হাজার আসন খালি থাকে। এই সুযোগে বাংলাদেশী পাসপোর্ট ব্যবহার করে ইউকে প্রবাসীরা বহুল আকাঙ্খিত হজ্ব পালন করতে পারবেন।
ব্রিটেন সফররত খন্দকার সিপার আহমেদ গত ১৩ সেপ্টেম্বর শুক্রবার লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবে এক মতবিনিময় সভায় এই তথ্য তুলে ধরেন। দেশের ট্রাভেল ট্যুরিজম ও সিলেটে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু নিয়ে এই মতবিনিময় সভায় অংশ নেন ইউকের বাংলাদেশী কমিউনিটির ব্যবসায়ী, সামাজিক ও কমিউনিটি সংগঠনের শীর্ষ নেতারা।
সভায় খন্দকার সিপার বলেন, সিলেটে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট নিশ্চিত করার এখনই সুযোগ এসেছে। থার্ড ক্যারিয়ার ( অন্যান্য এয়ারলাইন্স) নামানোর দাবি জুড়ালো করতে হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশ বিমানকে বাঁচাতে গিয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সিলেটীরা। লোকসান দিয়ে হলেও চট্টগ্রামে থার্ড ক্যারিয়ার অপারেট হচ্ছে কিন্তু সিলেটকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এই ইস্যুতে প্রবাসীদের জুড়ালো ভুমিকা রাখতে হবে।
লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সাধারান সম্পাদক ও সাপ্তাহিক দেশ পত্রিকার সম্পাদক তাইসির মাহমুদের পরিচালনায় এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, ক্লাবের প্রেসিডেন্ট ও টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়রের এডভাইজার মুহাম্মদ জুবায়ের ও ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার ও কমার্সের ডাইরেক্টর জেনারেল সলিসিটর দেওয়ান মাহদি।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন, গ্রেটার সিলেট কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন ব্যারিস্টার আতাউর রহমান, কমিউনিটি নেতা ও সাংবাদিক কেএম আবু তাহের চৌধুরী, লন্ডনের ব্রেন্ট কাউন্সিলের সাবেক মেয়র কাউন্সিলর পারভেজ আহমেদ, ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট শাহগীর বখত ফারুক, সাবেক প্রেসিডেন্ট বশির আহমেদ, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও তাজ একাউন্ট্যান্টের স্বত্বাধিকারী আবুল হায়াত নুরুজ্জামান, ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের ফাইনান্স ডাইরেক্টর ও জেএমজি কার্গের স্বত্বাধিকারী মনির আহমেদ, গ্রেটার সিলেট কাউন্সিলের সাবেক সেক্রেটারী জেনারেল মির্জা আসহাব বেগ, ইউকেবাটার সভাপতি ও হিলসাইড ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী হেলাল খান, সাবেক সভাপতি ও ইমরান ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী আশিকুর রহমানসহ আরো অনেকে।
সভায় দেশের ট্রাভেল ট্যুরিজম ও সিলেটে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু ও হজ্বের সুবিদা নিয়ে বিস্তারিত তুলে ধরে খন্দকার সিপার বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে গত বছর ১৮ লাখ ৩৩ হাজার ১শ ৬৪ জন হাজী হজ্ব করার সুযোগ পেয়েছিলেন। এরমধ্যে বাংলাদেশের জন্য গত ২০২৪ সালে কোটা ছিল ১লাখ ২৭ হাজার ১শ ৯৮ জনের। বাংলাদেশ থেকে গত বছর মাত্র ৮৫ হাজার ২শ ২৫ জন পবিত্র হজ্ব পালন করেছেন। সেই তুলনায় বাংলাদেশের কোটা পুরণ হয়নি। সুযোগ থাকলেও প্রায় ৪২ হাজার হজযাত্রী পায়নি বাংলাদেশ সরকার।তাই যুক্তরাজ্যের কোটার কারনে যারা পবিত্র হজ্বে যেতে পারছেন না। তারা চাইলে সিলেট থেকে এই সুযোগটা নিতে পারবেন।
এদিকে দীর্ঘ দিন থেকে ওসমানী বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ ও সুবিধাদি বৃদ্ধি করা প্রবাসী অধ্যুষিত সিলেটের মানুষের প্রাণের দাবি হয়ে উঠেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২ হাজার ১শ’ ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০২০ সালে শুরু হয় ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সম্প্রসারণ প্রকল্প। ৪ বছরে প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি হয়েছে মাত্র এক চতুর্থাংশ। সকল প্রবাসীসহ সিলেটবাসীর প্রাণের দাবি দ্রুততম সময়ে সম্প্রসারণ কাজ শেষ করা। এই দাবিতেও আপনাদের সোচ্ছার ভুমিকা কামনা করছি।
২০১৮ সালে আমি সিলেট চেম্বারের দায়িত্বে থাকাকালে সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষের কাছে রাতের ফ্লাইট চালুর দাবি জুড়ালোভাবে উত্তাপন করি। যার প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর থেকে সিলেট—ঢাকা—সিলেট ফ্লাইট চালু রয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে সিলেট ওসমানী আন্তজার্তিক বিমানবন্দরে এমজিএ সেবা চালু রয়েছে।