ব্যারিস্টার নাজির আহমেদ
যুক্তরাজ্য থেকে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এখন এখানে কাকে হাইকমিশনার হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকার নিয়োগ দিবেন – এ নিয়ে চলছে জল্পনা কল্পনা। বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাজ্য হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন ডিপলোমেটিক পোষ্ট – সম্ভবত: যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘের পরই যুক্তরাজ্যের স্থান। অতীতে এমন লোকদেরকে এখানে হাইকমিশনার হিসেবে পাঠানো হয়েছিল যাদের বেশীরভাগই আসলেই কোন কাজের ছিলেন না। দু:খজনক হলেও সত্য যে, অতীতে এখানে বৃদ্ধ বয়সে অনেকটা ডাম্পিং বা চিকিৎসার জন্য পদায়ন করে পাঠানো হয়েছে। প্রায় ৮০’র কাছাকাছি বয়সের সাবেক স্পীকার বা একটি পাবলিক ইউনিভার্সিটির অবসরপ্রাপ্ত ভিসি বা অবসরের পর অসুস্থ একজন সচিবকে দৃশ্যত চিকিৎসার জন্য চুক্তিভিত্তিক পাঠিয়ে ডিপ্লোমেটিক্যালী কি এচিভ করা হয়েছিল? শুধু হাইকমিশনার লেভেলেরই নয়, এর নীচের পজিশনগুলোতেও অতীতে দেখেছি চিকিৎসার জন্য বা অন্য কারণে পাঠানো হয়েছিল: যেমন একজন নামকরা সাংবাদিক শেষ বয়সে চিকিৎসার জন্য প্রেস মিনিস্টার হিসেবে এসেছিলেন। আরেকজন তো দস্তুর মতো ছোট একটি পজিশনে এসে ফুলটাইম পড়াশুনা করে বার-এট-ল পর্যন্ত করে ফেলেছিলেন! এভাবে আরো বেশ কয়েকটি উদাহরণ দেয়া যাবে। মোট কথা – রাষ্ট্রের জন্য তারা কতটুকু সার্ভিস দিয়েছেন বা দেয়ার সক্ষমতা ছিল এ নিয়ে বিস্তর প্রশ্ন থাকলেও তারা তাদের নিজেদের স্বার্থ ঠিকই উদ্ধার করেছেন। একটি গুরুত্বপূর্ন দেশে ডিপলোমেটিক সার্ভিসে এভাবে নিয়োগ দেয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত?
যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশীদের আলাদা একটা অবস্থান আছে। এখানে প্রায় এক মিলিয়ন বাংলাদেশীর বসবাস। এখানে অনেক দক্ষ, উচ্চশিক্ষিত, স্মার্ট, যোগ্য ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিত্ব ও প্রফেশনালরা আছেন যারা অত্যন্ত চমৎকারভাবে বাংলাদেশকে বৃটেনে রিপ্রেজেন্ট করতে পারবেন। তাছাড়া তারা এখানে বসবাসকারী মিলিয়ন বাংলাদেশী ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে এক সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করতে পারবেন। বাংলাদেশ থেকে কোনো ক্যারিয়ার ডিপলোমেটকে পাঠালেও এখানের প্রকৃত অবস্থা জানতে ও এই পরিবেশের সাথে নিজেকে খাঁফ খাইয়ে নিতে অনেক সময় চলে যায়।
সুতরাং সব কিছুর বিবেচনায় বৃটেনে পরবর্তী বাংলাদেশ হাইকমিশনার যেন বৃটিশ- বাংলাদেশী কমিউনিটি থেকে দেয়া হয়/নেয়া হয় – এই যৌক্তিক ও প্রাসঙ্গিক দাবী বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে বিনীতভাবে রাখছি।