সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ থেকে তেল-গ্যাস সরবরাহ হয়ে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করলেও গোলাপগঞ্জ উপজেলার ৯০ ভাগ মানুষই গ্যাস সুবিধা ধেকে বঞ্চিত। দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভে এখন ফুঁসে উঠছে জনগণ। গ্যাস সংযোগ, স্থানীয়দের কাজের সুযোগ সহ বিভিন্ন দাবী দাওয়ার দাবীতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে গোলাপগঞ্জবাসী।
গত ১২ অক্টোবর শনিবার যুক্তরাজ্য সময় বিকাল ৪টায় হাওয়া টিভিতে এক ভার্চুয়াল সভায় গোলাপগঞ্জের নেতৃবৃন্দ বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের একটাই দাবী- জনগণের সরকার এখন জনগণের দাবিতে আন্তরিক হবে। দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি গোলাপগঞ্জের উন্নয়নকে মনোনিবেশ করবে।
যুক্তরাজ্য প্রবাসী কমিউনিটি সংগঠক ও সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান শানুরের সঞ্চালনায় এবং লেখক ও সাংবাদিক আনোয়ার শাহজাহানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন, প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা সংস্করণের সম্পাদক এবং সাইপাম- সিমিটার আন্দোলনের অন্যতম সদস্য এডভোকেট ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন, গোলাপগঞ্জ সাইপাম আন্দোলন স্টিয়ারিং কমিটির অন্যতম সদস্য আহমদ হোসেন খান শামীম, গোলাপগঞ্জ গ্যাস আন্দোলন লক্ষনাবন্দ-লক্ষিপাশা ইউনিয়ন দাবী বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী (রুহুল), সিনিয়র আইনজীবী ও সমাজসেবী দেলওয়ার হোসেন দিলু, লেখক ও সাংবাদিক আনোয়ার শাহজাহান।
সভায় গোলাপগঞ্জের নেতৃবৃন্দরা আরো বলেন, গোলাপগঞ্জের লোকেরা যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও গ্যাস ফিল্ডে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন না। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও স্থানীয়দের বঞ্চিত করে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বাইরে থেকে লোক নিয়োগ দেয়া হয়। অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত অস্থানীয়দের নিয়োগ বাতিল করে স্থানীয় যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানানো হয়।
নেতৃবৃন্দরা বলেন, গোলাপগঞ্জ থেকে উত্তোলিত গ্যাস সারা দেশে সরবরাহ হয়ে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। নতুন করে যে কূপ থেকে গ্যাস মিলছে সেখান থেকে প্রতিদিন আরও ১৬২০ কোটি টাকার গ্যাস যুক্ত হচ্ছে জাতীয় গ্রিডে। কিন্তু এর কোনো সুফলই পাচ্ছেন না গোলাপগঞ্জবাসী। দীর্ঘদিন থেকে গ্যাস সংযোগের দাবি জানিয়ে আসলেও ৯০ ভাগ মানুষই গ্যাস সংযোগ থেকে বঞ্চিত রয়েছেন।
এছাড়া প্রতিনিয়ত তেল-গ্যাস উত্তোলনের কারণে পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। সাধারণ নলকূপ দিয়ে এখন আর পানি উঠছে না। ফলে পানীয় জলের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা এ ব্যাপারে কোনো উদ্য্গো নিচ্ছেন না। সংবাদ সম্মেলনে পর্যাপ্ত পরিমাণে গভীর নলকূপ স্থাপনের দাবি জানানো হয়।
সভায় এভাবে আরো দুটো ভার্চুয়াল সভা এবং গোলাপগঞ্জের প্রতিটি ইউনিয়নে একটি কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। পরবর্তীতে লন্ডনে কমিউনিটির সকল নেতৃবৃন্দকে নিয়ে একটি সভা করে পূর্ণাঙ্গ আন্দোলনের রূপরেখা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।