।। আহসান হাবীব ইমরোজ।।  মুহাম্মদ সা.; প্রিয়তম : তুমি শুভ্র, সুন্দর ও শ্রেষ্ঠত।।

ইহলৌকিক ও পারলৌকিক উভয় জগতে সাফল্য অর্জন, আম

মানুষ শুধু নয়, মহামানবদের জীবনেও এক আকাশচুম্বি প্রত্যাশা।

ডেলকার্নেগীর ‘প্রতিপত্তি ও বন্ধু লাভ’ এবং ‘দুশ্চিন্তাহীন নতুন জীবন’ বই দু’টি পড়েননি এমন শিক্ষিত মানুষ হাল-জামানায়ও পাওয়া কঠিন । এদের বিক্রি-বাট্টার পরিমাণ প্রায় পাঁচ কোটির ওপরে । সেই অসম্ভব প্রত্যয়দীপ্ত মানুষটিও আত্মœহত্যা করেছিলেন বলে জোর গুজব আছে।

ভারতের সেরা আন্তর্জাতিক মোটিভেশনাল বক্তা,লেখক শিব খেরা তার বিখ্যাত বই ‘ইউ ক্যান উইন’ যা প্রায় ১৭০ লক্ষ কপির অধিক বিক্রি হয়েছে। তিনি নিজ বইয়ের বিপুলখ্যাতিতে বিমোহিত হয়ে ২০০৪ সালে দক্ষিণ দিল্লিতে দাড়িয়ে গেলেন এমপি পদে । তারপর ফলাফল কী ? গো-হারা! পেলেন তৃতীয় স্থান। কিন্তু হায় ! জামানতও যে বাজেয়াপ্ত!! প্রাপ্ত ভোট মাত্র সাকুল্লে ১%!

আলেজেন্ডার দি গ্রেট । আড়াই হাজার বছরব্যাপী তার নাম পৃথিবীময়। পূর্ববর্তী পাঁচ পুরুষ রাজা ছিলেন। এরিস্টটলের সরাসরি ছাত্র তিনি। মাত্র ২৫ বছর বয়েসে রাজা হন । পরবর্তী ৮ বছরে ১১,০০০ মাইল অভিযান পরিচালনা করে ৩৫ লক্ষ মানুষের লাশের স্তুপ ঠেলে পৃথিবীর ৩টি মহাদেশের ৭০টি প্রধান শহর জয় করে, ২০ লক্ষ বর্গমাইল সা¤্রাজ্য স্থাপন করেন ।

কিন্তু কী দূর্ভাগ্য ! মাত্র ৩৩ বছর বয়েসেই যখন অজ্ঞাত কারণে ইন্তেকাল করেন তার সা¤্রাজ্য তাসের ঘরের মতোই হারিয়ে যায় । এমনকি তার লাশটিও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। কেউ জানে না তার শেষ সমাধিটা আজ কোথায় । তার বংশ এমনকি কোন অনুসারী পর্যন্ত পৃথিবীতে খুজে পাওয়া যায় না।

চেঙ্গিস খান পৃথিবীতে ছিল এক দাবানলের নাম। প্রায় ৪ কোটি মানুষের রক্তের গঙ্গা ও লাশের পাহাড় তৈরি করে ৯০ লক্ষ বর্গমাইলের সা¤্রাজ্য স্থাপন করেন । এরপর ১২২৭ সালে অজ্ঞাত কারণে মারা যান। গত ৮০০ বছরে তার লাশটি পর্যন্ত খুজে পাওয়া যায়নি। অনুসারীতো দুরের কথা তার নামে কেউ নামও রাখে না।

আর ওদিকে মুহাম্মদ সা. যার ব্যাপারে বিস্ময়কর মন্তব্য করেছেন বৃটিশ রাজের গুরুত্বপূর্ণ সম্মানপ্রাপ্ত কর্মকর্তা , সেরা ক্রিকেটার বোসওয়ার্থ স্মিথ- ‘দেশের-প্রধান এমনকি চার্চেরও (উপাসনালয় বুঝিয়েছেন) প্রধান! তিনি একাধারে সীজার ও পোপ। পোপের হুংকার ছাড়াই তিনি ছিলেন পোপ এবং সীজারের বিরাট সেনাবাহিনী ও রাজস্ব ছাড়াই তিনি সীজার।

যদি আজ পর্যন্ত কোন লোক দাবি করেন যে তিনি সঠিক এবং স্বর্গীয়ভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন। তিনিই হচ্ছেন মুহাম্মাদ। তাদের এ সকল সমর্থন ছাড়াই তিনি সকল ক্ষমতার অধিকারী। কিন্তু তিনি ক্ষমতা প্রদর্শনের তোয়াক্কা করতেন না।’

কার্লমার্কস,হেগেল,মাওসেতুং পৃথিবীকে কাঁপিয়েছেন কতো নেতা। কিন্তু ভালোবেসে কয়জনে তাদের নামে নিজের বা সন্তানের নাম রাখে ? আপরদিকে পৃথিবীর ১৮০ কোটি মুসলিমের ভিতর কমপক্ষে ৮০/৭০ কোটি জন তাদের নামের আগে তাদের প্রিয় নেতা মুহাম্মদকে স্থাপন করেছে।

নামটি পুরুষবাচক বিধায়; নইলে বাকী অর্ধেক মুসলিম মহিলারাও এ বরকত থেকে বঞ্চিত হতো না । পৃথিবীর ২০ লক্ষাধিক মসজিদে প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত আজানে কমপক্ষে ২ কোটি বার এই মহামনীষীর নাম সু-উচ্চকণ্ঠে উচ্চারিত হয়।

সারা পৃথিবী নানা টাইম জোনে বিভক্ত । তাই সারাদিনে এমন কোন মিনিট বা সেকেন্ড পাওয়া যাবে না যখন বুলন্দ আওয়াজে পৃথিবীর আকাশ-বাতাস মুহাম্মদ সা.এর নাম উচ্চারিত হচ্ছে না ।

বিশ্বনেতা সর্বোত্তম মানব মুহাম্মদ সা. ও তার প্রচারিত আদর্শ ইসলামকে ল্উিটলস্টয় চিনেলেন, বার্নাড শ চিনলেন, চিনলেন মাইকেল এইচ হার্টসহ হাজারো অমুসলিম ।

কিন্তু কী দূর্ভাগ্য! যাদের নামের শুরুতেই তাদের পরম শ্রদ্ধেয় পিতামাতা ভালোবেসে মুহাম্মদ নামটি জুরে দিলেন এবং সুন্দর একটি ইসলামী নামও রাখলেন। আমরা সেই মুসলিমরা সত্যিকার রূপে নিজেদের নবী ও তার আদর্শকে কেন আজও পুরোপুরি চিনতে ও অনুসরণ করতে পারছি না ?

হে পরম প্রভু, আমাদেরকে নবী মুহাম্মদ সা. এর যোগ্য উম্মত হিসেবে কবুল করুন।।

– ড. আহসান হাবীব ইমরোজ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে